Cyclone Dana

আয়লার পনেরো বছর পরেও কংক্রিটের বাঁধ হয়নি

আয়লার পর রাজ্যের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায় প্রশাসন।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা , নবেন্দু ঘোষ 

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১৩
Share:

এমনই বেহাল বাঁধ। গোসাবার পাখিরালয়ে। নিজস্ব চিত্র।

আরও এক ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক। আরও এক বার বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হওয়ার ভয় নিয়ে রাত জাগছে সুন্দরবন।

Advertisement

২০০৯ সালে আয়লা আছড়ে পড়েছিল সুন্দরবনে। প্লাবিত হয় বহু গ্রাম। বহু মাটির বাড়ি, রাস্তা, বাঁধ ও চাষের জমির ক্ষতি হয়। চাষের জমি লবণমুক্ত হতে পেরিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বছর। কিছু রাস্তা সংস্কার হয়েছে, কিছু হয়নি। সব থেকে প্রয়োজনীয়, সেই নদীবাঁধ পুরো কংক্রিটের হল না এখনও।

আয়লার পর রাজ্যের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায় প্রশাসন। কিন্তু কংক্রিটের বাঁধ হয় না।

Advertisement

হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের হেমনগর থানার সর্দারপাড়ায় আয়লার সময় রায়মঙ্গল নদীর বাঁধের বড় অংশ ভেঙে যায়। বাঁধের একদম পাশে বসবাস করে সাত-আটটি পরিবার। তাঁদেরই এক জন পরিমল সিংহ বললেন, ‘‘আয়লায় বাঁধ ভেঙে ঘর ছাড়া হয়েছিলাম। ত্রাণ শিবির থেকে বাড়ি ফিরে দেখি বাড়ি বলতে আর কিছু নেই।’’ সোই রায়মঙ্গল নদীর বাঁধও কংক্রিটের হয়নি। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘সেচ দফতর কাজ করছে এই জায়গায়। কংক্রিটের না হোক, মজবুত বাঁধই হবে।’’

একই ছবি সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট ১ পঞ্চায়েত এলাকায়। দ্বীপের চার দিকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার মাটির নদীবাঁধ। আয়লার সময়ে এই দ্বীপের ২৭ জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে গোটা পঞ্চায়েত জলের তলায় চলে গিয়েছিল। ২০১৬ সালের মধ্যে মাত্র তিন কিলোমিটার বাঁধ কংক্রিটের হয়েছে। বিডিও (সন্দেশখালি ১) সায়ন্তন সেন বলেন, "কংক্রিটের বাঁধের বিষয়টি সেচ দফতর দেখছে।"

সন্দেশখালি ২ ব্লকের মণিপুর পঞ্চায়েত আয়লার সময়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার নদী বাঁধ ভেঙে যায়। কংক্রিটের নদীবাঁধ হয়েছে মাত্র তিন কিলোমিটার।

আয়লায় ক্ষতি হয়েছিল গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং ব্লকেও। গোসাবা ও বাসন্তী ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার নদীবাঁধ ভেঙে গিয়ে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। সেই বাঁধ মেরামত হলেও নদীবাঁধের বড় অংশ কংক্রিটের হয়নি। যেমন, গোসাবা ব্লকের প্রায় ৩২০ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতি হলেও মাত্র ১৮ কিমি নদীবাঁধ কংক্রিটের তৈরি হয়েছে এত দিনে।

ডেনার আতঙ্কে রাত জাগতে জাগতে এলাকার মানুষ চাইছেন, সুন্দরবন জুড়ে নদীবাঁধ দ্রুত কংক্রিটের করা হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement