সরস্বতী পুজোর আগেও তেমন বিক্রি নেই ফুলের। নিজস্ব চিত্র।
বাঙালির বসন্ত পঞ্চমীই ভ্যালেন্টাইনস ডে। এই বছর সরস্বতী পুজো এবং ভ্যালেন্টাইনস ডে একই দিনে পড়েছে। সন্দেশখালিতে সরস্বতী পুজো হয় ধুমধাম করে। পুজোর দিনে অন্য দ্বীপ থেকে তরুণ-তরুণীরা দলে দলে নদী পেরিয়ে আসেন এখানে। কিন্তু এ বার ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেই উন্মাদনা একেবারেই নেই। জুটি বেঁধে ঘুরে বেড়ানোর ভাবনাও স্থগিত রেখেছেন অনেকে, প্রিয় মানুষের হাতে হাত রেখে যাঁরা বেরনোর কথা ভেবেছিলেন।
সন্দেশখালি রাধারানি হাই স্কুলে প্রায় ১৩৫০ জন পড়ুয়া। বড় করে সরস্বতী পুজো হয়। সন্দেশখালির ঘটনায় পুলিশ ক্যাম্প হয়েছে স্কুলে। চাপা আতঙ্ক গ্রামবাসীদের মধ্যে। স্কুলের পুজোয় উৎসাহ নেই পড়ুয়াদেরই। স্কুলের শিক্ষক দেবাশিস মিত্র বলেন, ‘‘পুজো হবে ছোট করে। অন্য বারের মতো জাঁকজমক হবে না। বসন্ত এলেও মুখভার সন্দেশখালির।’’
স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী জানাল, মঙ্গলবার সন্দেশখালি বাজার থেকে দু’টো গোলাপ কিনেছে প্রণয়ীর জন্য। ভ্যালেন্টাইস ডে’তে যদি ফুল বিক্রেতা না আসে তাই আগাম কিনে রাখা। কিশোরী বলে, ‘‘ভেবেছিলাম এক সঙ্গে স্কুলে অঞ্জলি দেব। কিন্তু তা আর হবে না। এলাকার যা পরিস্থিতি, বাবা-মা হয় তো ছাড়বেই না বেশিক্ষণের জন্য।’’ কিশোরী জানায়, নদীর পাড়ে দেখা হয়ে যাবে ভালবাসার মানুষের সঙ্গে, তবে এক সঙ্গে ঘোরার প্ল্যান বাতিল।
সন্দেশখালির কালীনগর কলেজের ছাত্রী পাপিয়া পাত্রের বাড়ি সন্দেশখালি পাত্রপাড়ায়। পাপিয়ার কথায়, ‘‘আমার পছন্দের মানুষের বাড়ি টাকিতে। তবে এখানে পরিস্থিতি হঠাৎ অন্য রকম হয়ে গেল। গত কয়েক বছর এক সঙ্গে টাকি ঘুরেছি। এ বার ও আমাকে নিতে আসবে বলেছে খুলনা খেয়াঘাটে। তবে মা কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না ছাড়তে। জানি না, এই অশান্ত পরিবেশে বছরের এমন বিশেষ দিনটায় আদৌ দেখা হবে না!’’
সোমবার পর্যন্ত দ্বীপের কোথাও পুজো উপলক্ষে বক্স বাজতে শোনা গেল না। অথচ এই দ্বীপে অন্য বছর সরস্বতী পুজোর আগের দিন থেকে বক্সের শব্দে কান পাতা দায় হত। এবার শুধুই কান পাতলে মহিলাদের অভিযোগ, কান্না আর পুলিশের রুট মার্চে ভারী বুটের শব্দ।