মুখে তোলা যায় না জল। বালিমিশ্রিত ঘোলা নোনা জল বেরোচ্ছে পাইপলাইন থেকে। কখনও-সখনও তা দুর্গন্ধযুক্তও। কিন্তু এই দূষিত জলই এখন ভরসা ডায়মন্ড হারবারবাসীর। ফি বছর গরমের মরসুমে এটাই দস্তুর এ অঞ্চলের।
প্রায় ৪৮ কোটি টাকা খরচে নির্মিত জল প্রকল্প থেকে বেরোনো দূষিত এই জলেই এখন চলছে বাড়ির নানা কাজ। এই ছবি ডায়মন্ড হারবার পুরসভার।
পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প ২০০৮ সালে ‘জওহরলাল নেহরু আরবান রিনিউয়্যাল মিশনে’র অনুমোদন পায়। ওই প্রকল্পে হুগলি নদীর জল শোধন করে তা সরবরাহ করার ব্যবস্থা হয়। ডায়মন্ড হারবারের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে কলেজের পিছনে ওই প্রকল্প তৈরি হয়। নিউটাউন, পুরাতন বাজার ও ধনবেড়িয়া এলাকায় তিনটি জলাধার তৈরি করা হয়। বছর দেড়েক আগে থেকে ওই জলাধার থেকেই ১৬টি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করা শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকার ৪৮ কোটি টাকা খরচ করে জল প্রকল্প করল। অথচ সেই প্রকল্প প্রায়ই নোংরা দুর্গন্ধ জল সরবরাহ করছে। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, জল থেকে বেরোচ্ছে কেঁচো, জোঁক, চিংড়ি। ওই জল ব্যবহার করে শিশুদের চামড়ার ও পেটের রোগ হচ্ছে। ওই প্রকল্পে টাকা যথাযথ ভাবে খরচ হয়নি। ডায়মন্ড হারবারের সিপিএমের নেতা সমর নাইয়ার অভিযোগ, পাইপ লাইনের জল নোনা ও অস্বাস্থ্যকর বলে অনেকেই তা ব্যবহার করতে পারছেন না। জল প্রকল্পের পরিকল্পনাতেই ভুল ছিল। কখনও প্রকল্পের মেশিন খারাপ হয়ে পড়ছে। ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী পুরপ্রধান মীরা হালদার বলেন, ‘‘পুরসভার মেয়াদ গত অক্টোবরে শেষ হওয়ার পরে মহকুমা প্রশাসনের অধীনে চলছে প্রকল্পটি। আমি থাকাকালীন নোনা জলের সমস্যা মেটাতে ৮টি পাম্প মেশিনে জল সরবরাহের পরিকল্পনা করেছিলাম। পাম্পগুলি বসানোর কাজ শেষ না হওয়ায় সমস্যা রয়ে গিয়েছে।’’
পুরসভার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মহকুমাশাসকের অধীনে পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ দাস। তিনি বলেন, ‘‘নদীতে জলস্তর নেমে যাওয়ায় নোনা জল উঠছে। পাইপলাইনের কিছু জায়গায় সংস্কারের কাজ শেষ হলে জলের সমস্যা মিটবে বলেই আশা করি।’’