ভোগান্তি: বৃষ্টির জমা জল সরেনি শনিবারও। ব্যারাকপুরে। ছবি: মাসুম আখতার
ভারী বৃষ্টি হয়েছিল গত বুধবার। তার পর থেকে তেমন বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু ব্যারাকপুর মহকুমার পানিহাটি ও ব্যারাকপুরের কোনও কোনও এলাকায় জল এখনও নামেনি। গোড়ালি ডোবা জল ভেঙে যাতায়াত করছেন ওই সব এলাকার বাসিন্দারা। জল ঢুকে রয়েছে অনেকের বাড়িতেও।
শোনা যায়, জল জমার কারণেই নাকি এক সময়ে এলাকার নাম হয়েছিল পানিহাটি। ভারী বৃষ্টিতে সেখানকার সোদপুর ও আগরপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা প্রতি বছরই ডুবে যায়। গত বুধবারের পরে পূর্ব পানিহাটির এইচ বি টাউন, নবারুণপল্লি, নাটাগড়ের কাছে সুলেখা মোড়, পূর্বাশা, রামচন্দ্রপুর এবং তীর্থ ভারতী এলাকার সুভাষনগরে শনিবার পর্যন্ত জল জমে রয়েছে।
এলাকার নিকাশির উন্নয়নের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে ‘নিকাশি ব্যবস্থা প্রতিকার উদ্যোগ’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। তাঁরা জানান, অনেক জায়গায় এখনও আবাসিক বাড়ির ভিতরে নোংরা জল জমে রয়েছে।
পূর্ব পানিহাটির বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বেআইনি নির্মাণের জেরে সোনাই নদী বহু বছর আগেই কার্যত পুকুরে পরিণত হয়েছে। ওই এলাকার জমা জল সাজিরহাট খালে ফেলতে নর্দমা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সাজিরহাট খাল পূর্ব পানিহাটির থেকে উঁচুতে। তাই ওই এলাকার নিকাশি জল খাল পর্যন্ত পৌঁছয় না, বরং খাল থেকে জল পূর্ব পানিহাটির দিকে এসে এলাকা ভাসিয়ে দেয়।
অন্য দিকে, ব্যারাকপুর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বড় এলাকায় জল জমে ছিল শনিবারেও। আবাসিকেরা জানাচ্ছেন, স্থানীয় ১৪ নম্বর রেলগেট পর্যন্ত এলাকা ডুবে রয়েছে। এ দিন দেখা গেল, জল ভেঙে মোটরবাইক চললে জলে রীতিমতো ঢেউ খেলছে। বাসিন্দারা জানালেন, বুধবার ভারী বৃষ্টির পরে হাঁটুজল ছিল। এখন রয়েছে গোড়ালির উপরে। তাঁদের অভিযোগ, বেহাল নিকাশির কারণেই গত দু’-তিন বছর ধরে ষষ্ঠীতলা নামে ওই এলাকায় এই সমস্যা চলছে।
যদিও ব্যারাকপুর পুরসভার প্রশাসক উত্তম দাসের দাবি, এমন সমস্যা এ বারই প্রথম। তিনি বলেন, ‘‘ওই এলাকার নীচের পাইপলাইনটি বহু পুরনো। পলি জমে গিয়েছে। আমরা যন্ত্র আনাচ্ছি পলি পরিষ্কার করার জন্য। জল নামাতে পাম্প বসানো হয়েছে। ৯০ শতাংশ জল নেমে গিয়েছে।’’
পানিহাটি পুরসভার প্রশাসক মলয় রায়ের দাবি, পূর্ব পানিহাটির অনেক জায়গাতেই জল নেমে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নিকাশি নালা তৈরির কাজ চলছে অনেক জায়গায়। তাই কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। আশা করি, কাজ শেষ হয়ে গেলে সমস্যা মিটে যাবে।’’