বনভোজনে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা। নিজস্ব চিত্র
আগামী দিনে দলে বেসুরোদের সংখ্যা যদি বেশি হয়, তাতে যদি সুর বাজে, তা হলে সেটাই মানুষ গ্রহণ করবেন। সেই অবস্থান তৈরি হতে চলেছে। এমনটাই মনে করেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। সোমবার বনগাঁয় দলীয় কর্মীর বাড়িতে চড়ুইভাতিতে যোগ দেন তিনি। সেখানে ছিলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা।
বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের নিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন করেছিলেন শান্তনু। বনগাঁ দক্ষিণের নহাটা এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপি কর্মী হরিশঙ্কর সরকারের বাড়িতে সেই বনভোজনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পদ্মশিবিরের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসু, বর্তমান কমিটির মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া-সহ অনেকেই।
রাজ্য বিজেপি-তে সম্প্রতি যে গোষ্ঠীকে নিয়ে মন্থন শুরু হয়েছে তার প্রধান চরিত্ররা উপস্থিত একত্রে, বনভোজনে। ফলে তাঁদের মধ্যে বনভোজনের বদলে রাজনীতিই যে মুখ্য আলোচ্য বিযয় হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য। যদিও প্রথমে বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক দাবি করেন, ‘‘বনভোজন আছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা খাদ্যপ্রিয় বাঙালি। আমরা খেতে এসেছি।’’
তবে অশোকের বক্তব্য সরিয়ে রেখেই শান্তনু বলে দেন, ‘‘যা বলার পরে বলছি।’’ রাজ্য কমিটি নিয়ে সম্প্রতি যে বিরোধ তৈরি হয়েছে সেই প্রসঙ্গে দলের উপর আস্থা রাখার কথাই বলছেন শান্তনু। একইসঙ্গে দিয়েছেন ধৈর্য রক্ষার বার্তাও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সব জিনিস বললেই সমাধান হয়ে যাবে এটা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে এমন কিছু পরিস্থিতি আছে যা বিজেপি-র ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। তার অশনি সঙ্কেত টের পেয়েছি। যা প্রতিরোধ করতে আমরা একটা অবস্থান তৈরি করেছি।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘উত্তরপ্রদেশে ভোটের প্রস্তুতি পর্ব চলছে। সেখানে এই মুহূর্তে নেতারা ব্যস্ত। তাই বাংলার ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সে হেতু আমরা বিষয়টি উত্থাপন করে রাখতে চাইছি যাতে আগামীতে এর যেন সমাধান হয়। আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নই। তাই ডেডলাইন দেব না। নেতৃত্বের উপর আমার বিশ্বাস আছে। তত দিন যাতে ক্ষতি না হয় সেই জন্য এই প্রস্তুতি পর্ব।’’ সোমবারের বনভোজনকে ‘সাংসদ সম্পর্ক যাত্রা’ হিসাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আনন্দ পাচ্ছি, উৎসাহ পাচ্ছি। এটা যেন ২০২৪ পর্যন্ত থাকে।’’
একইসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শান্তনু বলেন, ‘‘সুরের থেকে যদি বেসুর শুনতে ভালো লাগে তা হলে মানুষের কাছে সেটাই গৃহীত হয়। অর্থাৎ যে অবস্থান এখন আছে ভারতীয় জনতা পার্টির তাতে আগামীতে বেসুরোদের সংখ্যা যদি বেশি হয়ে সেটা সুরে বাজে তা হলে তা মানুষ গ্রহণ করবেন। সেই অবস্থান তৈরি হতে যাচ্ছে আগামীতে।’’