বকখালি সমুদ্র সৈকতে তৈরি হওয়া খাল। —নিজস্ব চিত্র।
জোয়ারের সময়ে দুর্ঘটনা এড়াতে বকখালি সমুদ্রসৈকতে খালের উপরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি অস্থায়ী ভাসমান জেটি তৈরির পরিকল্পনা করেছিল গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভলপমেন্ট অথরিটি (জিবিডিএ)। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ তাদের ষোলোতম বোর্ড মিটিংয়ে একাধিক উন্নয়ন মূলক কাজের পরিকল্পনা করছিল। তার মধ্যে ভাসমান জেটি তৈরির কাজটি ছিল অন্যতম। সে সময়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, জিবিডিএ-র চেয়ারম্যান শ্রীমন্ত মালি-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
গত কয়েক বছরে বকখালি সমুদ্রসৈকতে একটি খাল তৈরি হয়ে গিয়েছে। সমুদ্রে চর পড়ায় সৈকত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে তবেই মিলবে জল। সৈকতের সামনে প্রায় ৫০ ফুট চওড়া খাল তৈরি হয়েছে। ভাটার সময়ে ওই খালে জল থাকে না। তাই শুকনো খাল পার হয়ে সমুদ্রে স্নান করতে যান পর্যটকেরা। জোয়ার এসে গেলে খালটি ডুবে যায়। এই পরিস্থিতিতে সমুদ্র থেকে ফিরতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। বহু পর্যটক তলিয়েও গিয়েছেন ওই খালে। জোয়ারের সময়ে খালে পড়ে পর্যটকদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতেই ভাসমান জেটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বছর দু’য়েক আগে পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ভাটার সময়ে খাল পেরিয়ে যাঁরা সমুদ্রে নামবেন, জোয়ার এলে তাঁরাই ওই ভাসমান জেটি দিয়ে নিরাপদে ফিরে আসতে পারবেন। এ ছাড়াও, বকখালি পর্যটন কেন্দ্রে অ্যাকোয়ারিয়াম, সি ভিউ গ্যালারি, ফুড কোর্ট ইত্যাদিও গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল পর্ষদ। কিন্তু কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। বরং সৈকতের সংলগ্ন ঝাউবনও কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। নেই স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড। ইয়াসের পর থেকে ডিয়ার পার্কে হরিণও অনেক কমেছে। আপাতত পার্ক বন্ধ। নানা কারণেই জৌলুস হারাচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বকখালি। শ্রীমন্ত বলেন, “অর্থ অনুমোদন না হওয়ায় ভাসমান জেটির কাজ এখনও শুরু করা যায়নি। এ ছাড়া, বকখালিতে ওয়েলকাম গেট ও অন্যান্য কাজের জন্য আর্বান দফতরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে। বেশি অর্থের কাজগুলিতে অনুমোদন পেতে দেরি হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে ওয়েলকাম গেট তৈরির কাজ শুরু হবে।” নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাস বলেন, “বকখালিতে উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা পুজোর আগে অনুমোদিত হয়েছে। শীঘ্রই তার কাজ শুরু হবে। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।”