Canning

কোভিড হাসপাতালের  বর্জ্য থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ

ক্যানিংয়ের বৈদ্যুতিক চুল্লি বৈতরণীর অদূরে মাতলা নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে এই কোভিড হাসপাতালের বর্জ্য।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা 

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২০
Share:

অনিয়ম: এ ভাবেই পড়ে থাকে বর্জ্য। নিজস্ব চিত্র।

নদীর পাড়ে খোলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে কোভিড হাসপাতালের বর্জ্য। তা থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে আশপাশের এলাকায়। এ বিষয়ে প্রশাসন যথাযথ নজরদারি করছে না বলেই অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

ক্যানিংয়ের বৈদ্যুতিক চুল্লি বৈতরণীর অদূরে মাতলা নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে এই কোভিড হাসপাতালের বর্জ্য। কাক-পাখি, কুকুর, বেড়াল সেই ময়লা আবর্জনা ঘাঁটছে। দূষণ ছড়াচ্ছে এলাকায়। মাতলা সেতু থেকে বৈতরণীতে যাওয়ার রাস্তার পাশেই প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে এই আবর্জনা।

প্রথম কিছু দিন বর্জ্য আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও ইদানীং তা করা হচ্ছে না বলে জানালেন এলাকার মানুষজন। গর্ত করে মাটি চাপাও দেওয়া হচ্ছে না। দূষণ ছাড়াও জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

Advertisement

করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল তৈরি হয়েছে ক্যানিং স্টেডিয়ামে। হাসপাতালে ব্যবহৃত গজ, ব্যান্ডেজ, সূচ, সিরিঞ্জ এমনকী, পিপিই-সহ অন্যান্য বর্জ্য ফেলা হচ্ছে মাতলা নদীর পাড়ে খোলা জায়গায়।

বহু মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন ওই এলাকা দিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দা সৌমিত্র সর্দার বলেন, ‘‘এই পথ দিয়েই আমরা নদীতে মাছ ধরতে যাই। রাস্তার পাশে কোভিড হাসপাতালের বর্জ্য পড়ে থাকে। পশু, পাখি তা ছড়ায়।’’

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার বলেন, ‘‘একটি সংস্থা বর্জ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু ওরা কোথায় তা ফেলে বা এগুলি নিয়ে কী করে, সেটা জানা নেই।’’ বিষয়টি জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ক্যানিং ১ বিডিও শুভঙ্কর দাস। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কোভিড-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নানা দিক খতিয়ে দেখতে গত ২৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ৮ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করে। সেই কমিটিই মূলত এই বিষয়ে তদারকি শুরু করে। ইতিমধ্যেই কলকাতার তিনটি বড় হাসপাতালের বিরুদ্ধে এই কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে তাঁদের কোভিড-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গাফিলতির কারণে।

কোভিড-বর্জ্য ও অন্যান্য চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহ করে তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলতে রাজ্য সরকার দায়িত্ব দিয়েছে ছ’টি সংস্থাকে। ওই সব সংস্থার গাফিলতি নিয়ে কলকাতা পুরসভা ও বিভিন্ন জায়গার স্থানীয় প্রশাসন সরব। কলকাতা-সহ রাজ্যের কোভিড-বর্জ্য সংক্রান্ত একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে। সেই কমিটি কোভিড-বর্জ্য সংক্রান্ত সমস্যা এবং তার সমাধানের সুপারিশ করেছে। গত সোমবার সেই মামলার শুনানিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত পর্ষদকে ওই রিপোর্ট তাদের কাছে জমা দিতে বলেছে। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, ওই রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ও তিন সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement