হাতিশালার কাছে জলাভূমি ভরাট করে এ ভাবেই ফেলা রাখা হয়েছিল ইট। ছবি: সামসুল হুদা
জলাভূমি ভরাট করে রাস্তা তৈরি করার অভিযোগ উঠল জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার ভাঙড় ২ ব্লকের ভোজেরহাট গাবতলা রাস্তার পাশে হাতিশালার কাছে জলাভূমি ভরাট করে ইট ফেলে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। খবর পাওয়া মাত্রই অবশ্য পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। রাতের মধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে পে-লোডার নামিয়ে জলাভূমি থেকে সমস্ত ইট তুলে ফেলা হয়।
সম্প্রতি ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ১, ২, বামনঘাটা পঞ্চায়েত এলাকায় জমি মাফিয়ারা কিছু রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতায় জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ শুরু করে বলে অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে, নিউটাউন-লাগোয়া কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকা এবং বাসন্তী হাইওয়ের পাশে বামনঘাটার কাছে বেশ কিছুদিন ধরেই জলাভূমি, মেছোভেড়ি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ চলছিল বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। নিউটাউন-লাগোয়া এই সমস্ত জমির দাম আকাশছোঁয়া। রাতারাতি সেখানে সরকারি জলাভূমি জবরদখল করে বেআইনি নির্মাণ চলছিল বলে অভিযোগ। এর ফলে এলাকার পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে বলে প্রতিবাদ জানান স্থানীয় মানুষ। বিষয়টি নিয়ে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী পরিবেশমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান। তৃণমূলের ভাঙড় বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান রেজাউল করিমও বেআইনি কাজ বন্ধ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
দিন কয়েক আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ভাঙড় ২ ব্লক এলাকায় কোথায় কোথায় জলাভূমি ভরাট ও বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। সেই মতো ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সমস্ত এলাকার জলাভূমি ভরাট ও বেআইনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তারপরেও এদিন কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় নিউটাউন-লাগোয়া হাতিশালার সিক্স লেনের কাছে জলাভূমি ভরাট করে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ কাজ বন্ধ করে দেয়। রাস্তা থেকে সমস্ত ইট তুলে নেয়।
কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার আইসি প্রশান্ত ভৌমিক বলেন, ‘‘আমরা যখন যেমন অভিযোগ পাচ্ছি, তখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছি। বেশ কিছু মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু জমি মাফিয়াদের চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’