প্রতীকী ছবি।
টোটোয় রাশ টানল প্রশাসন। বারুইপুরের পদ্মপুকুর থেকে রাসমাঠ পর্যন্ত কুলপি রোডে বন্ধ করে দেওয়া হল টোটো চলাচল। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা। রুজিতে টান পড়ার আশঙ্কায় টোটোচালকেরা। তবে প্রধান রাস্তার বাইরে অন্য রাস্তায় টোটো চলবে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বারুইপুরের শহরাঞ্চলে যানজটের মূল কারণ হয়ে উঠেছিল ব্যাটারিচালিত এই যান। স্থানীয়েরা জানান, গত দু’বছরে বারুইপুরে টোটো বেড়েছে হু-হু করে। নথিবদ্ধ পরিসংখ্যান না থাকলেও চালকদের তথ্য অনুযায়ী, শহর ও সংলগ্ন এলাকায় টোটোর সংখ্যা হাজার খানেক। অলিগলি তো বটেই, মূল রাস্তা কুলপি রোডেও ছেয়ে গিয়েছিল টোটো। ফলে যানজট বৃদ্ধির পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটছিল রোজ।
পরিস্থিতিতে রাশ টানতে টোটো-নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা শুরু করে প্রশাসন। সম্প্রতি মহকুমাশাসকের দফতরে পুলিশ এবং জন প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই যাত্রী স্বার্থে বড় রাস্তায় টোটো চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই প্রধান রাস্তায় টোটো চলছে না বলে দাবি পুলিশের।
এক যাত্রী জানান, গত কয়েক বছরে এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল এই টোটো। হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় কিছুটা সমস্যা তো হচ্ছেই। যদিও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগতও জানানোর সংখ্যাও খুব কম নয়। যেমন, নিত্যযাত্রী ঈপ্সিতা দাস। তাঁর কথায়, ‘‘টোটোয় চেপে স্টেশনে যাই। বড় রাস্তায় টোটো বন্ধ হওয়ায় কিছুটা ঘুরে যেতে হচ্ছে। তাতে সময় লাগলেও, যাত্রী স্বার্থে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত। তবে এখনও পুলিশের চোখ এড়িয়ে কিছু টোটো রাস্তায় উঠছে। সেগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।’’
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছেন টোটোচালকেরা। গত কয়েক বছরে বহু মানুষ চাষাবাদ বা দিনমজুরি ছেড়ে ঋণের টাকায় গাড়ি কিনেছেন। এখন তাঁদের অনেকেই রুজিতে টানের আশঙ্কা করছেন। টোটোচালক সৌরভ মণ্ডল বলেন, ‘‘বড় রাস্তায় উঠতে না দিলে যাত্রী অনেক কমবে। এতে আমাদের ক্ষতি হবে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন টোটো বেচে দেওয়ার কথাও ভাবছেন।’’
স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, এর সঙ্গে বহু মানুষের রোজগার জড়িয়ে রয়েছে, ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটেও সহজ ছিল না। পুলিশ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে অনড়। বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি ট্র্যাফিক কুতুবুদ্দিন খান বলেন, ‘‘বড় রাস্তায় এত টোটো চলায় যান নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হচ্ছিল। তাই এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।’’ তিনি আরও
জানান, এ বার অটো নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দেওয়া হবে। নিয়ন্ত্রণ করা হবে অবৈধ মোটরভ্যানও। যাত্রী সুরক্ষায় আপস করা হবে না বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ আধিকারিক।