তরুণীর পচাগলা দেহ উদ্ধার হল তাঁর বাড়ির দোতলার ঘর থেকে। প্রতীকী ছবি।
এক তরুণীর পচাগলা দেহ উদ্ধার হল তাঁর বাড়ির দোতলার ঘর থেকে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের মোহনপুর থানা এলাকার দেবপুকুর কলেজপল্লির এই ঘটনায় মৃত্যুর কারণ খুঁজছে পুলিশ। ওই বাড়ির একতলায় পরিবারের বাকি সদস্যেরা থাকেন। শনিবার দুর্গন্ধ ছড়ানোয় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। তদন্তে অনুমান, দিন চারেক আগে মৃত্যু হয়েছে তরুণীর।
পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি সুস্মিতা ঘোষ ওরফে সাথীর (২৪)। শিউলি পঞ্চায়েতের তেলেনিপাড়ায় সুস্মিতাদের পুরনো বাড়ি ও বিপুল সম্পত্তি ছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক প্রোমোটারের খপ্পরে পড়ে বাড়ি-সহ জমি জলের দরে বিক্রি করে দেন সুস্মিতার মা ইলা। বছর দুই আগে কলেজপল্লির বাড়িটি কিনে বসবাস শুরু করেন তাঁরা। ওই প্রোমোটারই সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। প্রতিবেশীদের দাবি, সম্পত্তি বেচে যে টাকা সুস্মিতারা পেয়েছিলেন, তা ফুরিয়ে যায়। ধীরে ধীরে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন সকলে। প্রতিবেশীরাই খেতে দিতেন।
তদন্তকারীরা জানান, এ দিন দুপুরে দোতলার ঘরে ঢুকে বিছানায় চিৎ হয়ে শোয়া সুস্মিতার দেহে প্রাথমিক ভাবে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। সুস্মিতার মা-সহ ওই বাড়ির বাকি তিন মহিলাও মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় কেউ কিছু বলতে পারেননি।
শিউলি পঞ্চায়েতের ভিলেজ রিসোর্স পার্সন পিন্টু দাস বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি সমীক্ষায় গিয়ে দিন দুয়েক আগে জেনেছি যে, ওই পরিবারটি অনাহারে রয়েছে। তখনও জানি না, বাড়ির ভিতরে এমন কাণ্ড ঘটেছে!’’ প্রতিবেশীরা ছাড়াও ওই বাড়িতে কাশীনাথ ঘোষ নামে এক আত্মীয় এবং ওই প্রোমোটার আসতেন। কাশীনাথ বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, এর পিছনে ওই প্রোমোটারের হাত আছে। সুস্মিতার চার দিন ধরে খোঁজ মিলছিল না। শুক্রবার নিখোঁজ ডায়েরি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু, হয়নি।’’
এই ঘটনার বিষয়ে ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘দ্রুত মৃতের পরিবারের তিন জনের মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। তাঁদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থাও করা হবে। তদন্ত চলবে। এই ঘটনায় কেউ জড়িত কি না, তা আমাদের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’