সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে পাহারায় পুলিশ-বিএসএফ

দিন কয়েক আগে কাশ্মীরের উরি সেক্টরে জঙ্গি হামলার পরে রবিবার রাতে ফের জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে কাশ্মীরের বারামুলা সেনা শিবির। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এখন চরম উত্তেজনা।

Advertisement

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২১
Share:

পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র।

দিন কয়েক আগে কাশ্মীরের উরি সেক্টরে জঙ্গি হামলার পরে রবিবার রাতে ফের জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে কাশ্মীরের বারামুলা সেনা শিবির। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এখন চরম উত্তেজনা। এই সময়ে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি না নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও পাহারা বাড়িয়েছে বিএসএফ এবং পুলিশের যৌথ বাহিনী।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বরূপনগর থেকে হেমনগর উপকূলবর্তী-সহ মোট ৬টি থানা এলাকার প্রায় একশো কিলোমিটার ধরে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। এর মধ্যে অনেকটা জায়গায় কাঁটাতার নেই। কোথাও আবার কাঁটাতার থাকলেও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই জায়গাগুলি দিয়ে বাংলাদেশ দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনু্প্রবেশকারীদের অনেকেই দাগি দুষ্কৃতী। এই বিষয়টিই ভাবাচ্ছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। তাই সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, বসিরহাট, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ এবং হেমনগর উপকূলবর্তী গ্রামে রুট মার্চ শুরু করেছে বিএসএফ এবং পুলিশের যৌথ বাহিনী।

জেলা পুলিশ এবং বিএসএফ কর্তাদের দাবি, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের গতিবিধির কথা অজানা নয় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের একাংশের। তাই পুলিশ এবং বিএসএফ জওয়ানেরা ইছামতী সেতু, ওল্ড সাতক্ষিরা রোড, টাকি রোড এবং ইটিন্ডা রোডের সঙ্গেই সীমান্তের গ্রামগুলিতে ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে। সীমান্ত-লাগোয়া সোনাই, ইছামতী, কালিন্দি, রায়মঙ্গল নদীতে লঞ্চ, নৌকাতেও চলছে তল্লাশি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সীমান্ত-লাগোয়া এলাকায় গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে উন্নত প্রযুক্তির আলো, ক্যামেরা এবং সিসিটিভি।

Advertisement

শুধু প্রযুক্তির উন্নতি নয়, জনসংযোগেও জোর দিয়েছে যৌথবাহিনী। সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখা হচ্ছে। ফল মিলেছে। যৌথবাহিনীর এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই বাড়ি বাড়ি তল্লাশির সময়ে কয়েকজন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তল্লাশিতে গিয়েছিল বিএসএফ এবং পুলিশের যৌথবাহিনী। নেতৃত্বে ছিলেন বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত, বিএসএফের ১৪৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের কোম্পানি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট গৌরব ত্যাগী-সহ কয়েকজন পুলিশ কর্তা। সোমবারও তল্লাশি চলেছে।

গৌরববাবু বলেন, ‘‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্তবর্তী এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি করেছে। জওয়ানের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি পাঠানো হয়েছে আধুনিক অস্ত্র।’’ তাঁর দাবি, দিন কয়েক কড়া তল্লাশির পরে সীমান্তে অনুপ্রবেশ কমেছে। সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীদের বোঝানো হচ্ছে, অনুপ্রবেশকারীদের বাড়িতে আশ্রয় দিলে কী বিপদ হতে পারে। বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি জানান, সন্দেহজনক কিছু দেখলে থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement