নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার হয় আইনজীবীর দেহ। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তায় প্রকাশ্যে বন্ধুর প্রস্রাব করার ভিডিয়ো করেছিলেন আইনজীবী। ভিডিয়োটি ফোন থেকে মুছে দিতে বলা সত্ত্বেও আইনজীবী তা শোনেননি। সেই কারণেই তাঁকে খুন করেছেন ওই পড়শি-বন্ধু! দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে আইনজীবী সঞ্জয় মিত্র খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে নিখোঁজ থাকার পর বুধবার বাড়ির কাছে একটি পানাভর্তি নয়ানজুলি থেকে সঞ্জয়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার আজাদ সর্দার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বারুইপুর থানার পুলিশ। তিনি বারুইপুরের মাঝেরহাট এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি ভিডিয়ো নিয়ে গন্ডগোলের জেরে আইনজীবীকে খুন করা হয়।
মৃতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত আইনজীবী সঞ্জয় বারুইপুরের সোলগোয়ালিয়া এলাকায় থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে একটি ফোন আসতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে স্ত্রীর তাঁর ফোনে কথাও হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যে বাড়ি আসছি জানিয়েও সেই দিন আর বাড়ি ফেরেননি সঞ্জয়। ফোনেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তার পর বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির অদূরেই পানাপুকুর থেকে উদ্ধার হল আইনজীবীর দেহ। জলে পড়ে ছিল তাঁর বাইকটি। বাইকের নীচেই চাপা পড়ে ছিলেন আইনজীবী। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।
সঞ্জয়ের স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। এই মর্মে বুধবার বারুইপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরও করেন তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আজাদকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করে হাতে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় ও আজাদ দু’জনেরই বাড়ি কাছাকাছি। বেশ কিছু দিন আগে রাস্তায় প্রস্রাব করছিলেন আজাদ। বেশ কিছু যুবক তার প্রতিবাদ করায় আজাদের সঙ্গে তাদের গন্ডগোল বেধে যায়। সেই গন্ডগোলের ভিডিয়ো মোবাইলনন্দি করেছিলেন আইনজীবী। সঞ্জয়কে সেই ভিডিয়ো মুছে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন আজাদ। সঞ্জয় তা না শোনায় তাঁকে আজাদ খুন করেছেন। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।