ডায়মন্ড হারবারে টাঙানো হচ্ছে আর্জেন্টিনার পতাকা। নিজস্ব চিত্র
লিওনেল আন্দ্রেস লিও মেসি নাকি কিলিয়ান এমবাপে, কার হাতে এবার উঠবে জুলে রিমে ট্রফি বা ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল ট্রফি— প্রতীক্ষার প্রহর শুনছে বাঙালি। বিশ্বকাপ থেকে নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়রের ব্রাজিল বিদায় নেওয়ার পরে সকলেই চাইছেন, মেসির হাতেই কাপ উঠুক। চায়ের দোকান, বাস-ট্রেনে ফাইনালে কী ফলাফল হতে পারে, চলছে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশ্বকাপের মরসুমে সকলেই রীতিমতো ফুটবল বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। তবে দুই ২৪ পরগনায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মানুষের পাল্লা ভারী আর্জেন্টিনার দিকে। ফরাসি স্ট্রাইকার এমবাপের প্রতি সহানুভূতি থাকলেও আমজনতার বড় অংশই চাইছেন, ফুটবলের আধুনিক রাজপুত্র মেসি একবার বিশ্বকাপ জিতুক।
গোবরডাঙার সরকারপাড়া যেন এক টুকরো কাতার। অতীতের বিখ্যাত ফুটবলারদের ছবি কাটআউট দিয়ে সাজানো হয়েছে এলাকা। ফাইনাল উপলক্ষে কফি ও জলখাবারের ব্যবস্থা থাকছে। পাড়ার মোড়ে বড় এলইডি স্ক্রিনে খেলা দেখার সুযোগ মিলবে। মাঠে না গিয়েও রীতিমতো মাঠের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে সেলফি জ়োন। দর্শকেরা বিশ্বখ্যাত খেলোয়ারদের কাটআউটের সঙ্গে সেলফি তুলতে পারবেন।
হাবড়ার মনসাবাড়ি এলাকায় সৃজনী সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষ থেকে এলইডি টিভি বসানো হয়েছে। থাকছে বিশ্বকাপের উপরে ক্যুইজ়।
ফুটবল জ্বরে কাঁপছে ডায়মন্ড হারবার শহরও। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে লিওনেল মেসির নানা কাটআউট বসানো হয়েছে। ঝোলানো হয়েছে আর্জেন্টিনার বিশাল বিশাল পতাকা। চায়ের দোকানের আড্ডায় রাজনৈতিক আলোচনা আপাতত পিছনের সারিতে। চলছে শুধুই ফুটবল-পে-চর্চা।
ডায়মন্ড হারবার বাসস্ট্যান্ডে দু’টি জায়েন্ট স্ক্রিনে খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেসি ভক্তদের জন্য থাকছে আহারের ব্যবস্থা। প্রত্যেক ভক্তের গায়ে থাকবে আর্জেন্টিনার জার্সি। উদ্যোক্তা, রেজাউল করিম, সুমিত গুপ্ত, শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়েরা জানালেন, ফাইনালে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হোক— এটাই চাইছেন তাঁরা। মেসির হয়েই গলা ফাটাবেন। গুঞ্জন শোনা গেল, ব্রাজিল কাপের লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার পরে সে দলের সমর্থকেরা অনেকেই মিশে গিয়েছেন আর্জেন্টিনার ভক্তদের সঙ্গে।
বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালের আগে ক্যানিং শহর সেজে উঠছে আর্জেন্টিনার পতাকা ও মেসির ছবিতে। যেখানে ব্রাজিল, পর্তুগালের সমর্থকেরা সেই সব দলের পতাকা লাগিয়েছিলেন, ফাইনালের আগে সেখানেই লাগানো হচ্ছে মেসির বড় বড় কাটআউট।
আর্জেন্টিনা (১৯৭৮ ও ১৯৮৬) ও ফ্রান্স (১৯৯৮ ও ২০১৮) দু’দলই দু’বার করে ফুটবল বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখন এটাই দেখার, তৃতীয়বারের জন্য কাপ উঠবে কাদের হাতে।