ছেলেধরা গুজব থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় একের পর এক গণপিটুনির ঘটনায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জেলা পুলিশ। এলাকায় ‘নতুন মুখ’ দেখলেই সন্দেহের দৃষ্টি এবং সেখান থেকে তাঁকে হেনস্থা, মারধরের ঘটনা ঘটে চলেছে। এরই মধ্যে একটি ‘অন্যরকম’ ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোপালনগরে। সেখানে এক ব্যক্তির চলাফেরা ‘সন্দেহজনক’ মনে হওয়ায় পুলিশে খবর দিলেন স্থানীয়েরা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশকর্মীরা বোঝেন ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে ওই স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।
গত কয়েক দিনের গণপিটুনির ঘটনার মধ্যে পুলিশি প্রচার অবশেষে কাজে এল বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, শুধু সন্দেহের বশে এলাকায় অপরিচিত মানুষকে দেখলেই তাঁকে হেনস্থার পর পর ঘটনাকে মোটেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না পুলিশ। এলাকায় এলাকায় প্রচার চলছে। অপরিচিত কাউকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখলে কিংবা তাঁর কোনও কাজ সন্দেহজনক মনে হলে থানায় খবর দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও ছেলেধরা গুজবে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুলিশ জেলা এলাকার বনগাঁ এবং গাইঘাটাতে দু’টি গণপিটুনির ঘটনা সামনে আসে। বনগাঁ এবং গাইঘাটা থানার পুলিশ ইতিমধ্যে ন’জনকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। বার্তা দেওয়া হচ্ছে, এলাকায় সন্দেহজনক কোনও ব্যক্তিকে দেখলে পুলিশকে জানাতে। কেউ যেন আইন হাতে তুলে না নেন। সোমবার সকালে গঙ্গানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মামুদপুর চারাতলা এলাকায় এক যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাকে দাঁড় করিয়েছিলেন কয়েক জন গ্রামবাসী। তার পর খবর দেওয়া হয় গোপালনগর থানায়। পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে থানায় নিয়ে যায়।
গোপালনগর থানার তরফে জানানো হয়েছে, কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের তরফেও সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। তাতে মানুষ সাড়া দিচ্ছেন। এটা সদর্থক ইঙ্গিত।