ভেজাল মোয়ার রমরমা

জন্মস্থান জয়নগর হলেও শীতের মরসুমে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই পাওয়া যায় জয়নগরের নাম বহনকারী এই মোয়া।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা 

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৭
Share:

মন-ভোলানো: স্বাদে-গন্ধে মানোত্তীর্ণ না হলেও বাজারে অভাব নেই মোয়ার। নিজস্ব চিত্র

প্রতি শীতে বাঙালির খাদ্য তালিকায় অন্যতম সংযোজন জয়নগরের মোয়া। তবে জয়নগরের মোয়ার নামে বেশিরভাগ জায়গাতেই বিক্রি হচ্ছে নকল মোয়া। বাস্তবে একে জয়নগরের মোয়া না বলে খইয়ের নাড়ু বলছেন আসল মোয়া প্রস্তুতকারীরা। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা-সহ আশপাশের এলাকায় এই নকল মোয়াই কার্যত এলাকার মানুষ কিনছেন ‘জয়নগরের মোয়া’ ভেবে।

Advertisement

জন্মস্থান জয়নগর হলেও শীতের মরসুমে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই পাওয়া যায় জয়নগরের নাম বহনকারী এই মোয়া। তবে আসল ও সুস্বাদু মোয়া পাওয়া যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম জনপদ বহুড়ু ও জয়নগর এলাকায়। আসল নলেন গুড় আর কনকচূড় ধানের খইয়ের সংমিশ্রণে তৈরি হয় এই মোয়া। জয়নগরের মোয়ার নাম করে বহু জায়গায় নকল মোয়া বিক্রি হওয়ায় আসল মোয়া প্রস্তুতকারকেরা অনেকে নিজেদের মোয়ার নাম পরিবর্তন করে একে ‘বহুড়ুর মোয়া’ নাম দিয়েছেন। বহড়ুর মোয়া ব্যবসায়ী রঞ্জিত ঘোষ, বাবলু ঘোষ বলেন, ‘‘জয়নগরের মোয়া তৈরির অন্যতম মূল উপাদান কনকচূড় ধানের খই ও নলেন গুড়। তার সঙ্গে শ্রীঘি, খোয়া ক্ষীর, কাজু-কিসমিস মিশিয়ে মোয়া তৈরি হয়। বহুড়ু এলাকাতেই পাওয়া যায় কনকচূড় ধান, উন্নতমানের নলেন গুড় ও মোয়া তৈরির দক্ষ কারিগর। তাই ভাল মোয়াও এই এলাকাতেই তৈরি হয়। নকল মোয়ার বদনাম থেকে বাঁচতে আমরা তাই বহুড়ুর মোয়া নাম দিয়েই গত কয়েক বছর ধরে এটা বিক্রি করছি।’’ তবে জয়নগরের আসল মোয়াও পাওয়া যায় বাজারে। কিন্তু ক্রেতাদের পক্ষে তা চেনা শক্ত। তাই নকল জয়নগরের মোয়ার বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করেন জয়নগরের বহু মোয়া ব্যবসায়ী।

সাধারণ খই, চিনির রস বা ভেজাল নলেন গুড় দিয়ে তৈরি হয় নকল মোয়া। এক কেজি আসল মোয়ার দাম যেখানে সাড়ে তিনশো থেকে চারশো টাকা, সেখানে এই খইয়ের নাড়ু বা নকল মোয়া বিকোচ্ছে দেড়শো থেকে দু’শো টাকা কিলো দরে।

Advertisement

ক্যানিংয়ের মোয়া বিক্রেতা দিলীপ ভান্ডারী বলেন, ‘‘আমরাও ভাল মোয়া তৈরি করি। কিন্তু দাম বেশি হওয়ার কারণে বেশিরভাগ মানুষ নিতে চান না। সকলেই কম দামে মোয়া কিনতে চান। তাই ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই ভাল মোয়া তৈরির। তবে কেউ যদি ভাল মোয়া চান, তা হলে আমরাও বরাত নিয়ে তা তৈরি করে থাকি।”

ক্যানিংয়ের বাসিন্দা খোকন মণ্ডল বলেন, “এখানে ভাল মোয়া পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে এই মোয়াই কিনি। তাতে নলেন গুড়ের স্বাদ তো দূরের কথা, গন্ধটুকুও পাওয়া যায় না!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement