বিপজ্জনক: এই বাঁধ নিয়েই আশঙ্কায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র
প্রতি বছর বর্ষায় নোনাজলে প্লাবিত হয় এলাকা। ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের তারাগঞ্জ পশ্চিমপাড়ার কাছে হুগলি নদীর বাঁধও ধীরে ধীরে ভেঙেছে। এক সময়ে নদী থেকে বেশ খানিকটা দূরে অবস্থিত স্কুলের বেশ কাছে এসে পড়েছে নদী। পরিস্থিতি এমনই, যে কোনও সময়ে নদীতে তলিয়ে যেতে পারে গোটা স্কুলভবন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাদুড়া হরিদাস পঞ্চায়েতে তারাগঞ্জ পশ্চিমপাড়ার কাছে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক। কয়েক বছরে নদীবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে প্রায় ২০০ মিটার ঢুকে এসেছে। এক সময়ে নদীবাঁধ থেকে দূরে তৈরি হয়েছিল তারাগঞ্জ জেলেপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটি। এখন ভাঙনের ফলে সেটি স্কুলের পুরনো ভবনের একেবারে কাছে ঘেঁষা এসেছে। পাশেই ছিল মিড ডে মিলের রান্নাঘর। তা এখন পরিত্যক্ত। যে কোনও মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে নদীর জলে তলিয়ে যেতে পারে সেই অংশ। পুরনো ভবনটিরও একই অবস্থা।
বাধ্য হয়ে পাশে দোতলা ভবনে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৭০ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। কাছাকাছি কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। দু’তিন কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের উপরে ভরসা করেন এলাকার অভিভাবকেরা। কিন্তু নদীবাঁধের ভাঙনে আতঙ্কিত তাঁরা।
গত ৫-৬ বছরে নদীবাঁধ এগিয়ে এসেছে অনেকখানি। আমপান-ইয়াসে গোটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। ডুবে গিয়েছিল শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটিও। নোনাজলে নষ্ট হয়ে যায় বই-খাতা, স্কুলের সরঞ্জাম। স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা শেফালি প্রামাণিক বলেন, ‘‘এখান থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে বাঁধ ছিল। এখানে ছেলেমেয়েদের খেলাধূলার মাঠও ছিল। তা ভাঙতে ভাঙতে স্কুলের পিছনে ঠেকে গিয়েছে। দ্রুত বাঁধ মেরামত বা নতুন করে তৈরি হওয়া দরকার। স্কুলের ভবনটি নদীর কিনারায় চলে এসেছে বলে আমরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। নদীবাঁধের বিষয়ে একাধিকবার ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’
ডায়মন্ড হারবার ২ বিডিও সুদীপ্ত অধিকারী বলেন, ‘‘ওই বাঁধের বিষয়ে জানার পরে আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ডায়মন্ড হারবার মহকুমা সেচ দফতরের আধিকারিককে জানানো হয়েছে।’’ ডায়মন্ড হারবার সেচ দফতরের আধিকারিক কৌশিক সাহা বলেন, ‘‘বাঁধের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সংস্কারের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’