—নিজস্ব চিত্র।
গাড়িচাপা পড়া এক রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ উঠল খড়দহের একটি সরকারি কোভিড হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত ওই সরকারি হাসপাতালের সামনেই মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধের। মঙ্গলবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের বলরাম স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, আসানসোলের বাসিন্দা বছর ষাটেকের কৃষ্ণ যাদব খড়দহ এসেছিলেন কাজের খোঁজে। সেখানে লরি থেকে সিমেন্টের বস্তা খালি করার কাজ করতেন। মঙ্গলবার রাতে কাজের শেষে লরির পাশে শুয়েছিলেন। হঠাৎই একটি লরি এসে তাঁকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বৃদ্ধকে খড়দহের বলরাম স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, কোভিড হাসপাতাল হওয়ায় ওই রোগীর জন্য গেটের তালা খোলেননি হাসপাতাল কতৃপক্ষ। হাসপাতালের সামনে প্রায় দেড় ঘণ্টা পড়ে থাকার পর মারা যান তিনি। এই ঘটনার জেরে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় খড়দহ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। বৃদ্ধের ছেলে অঙ্কিত যাদব বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে খড়দহের গ্যাস গোডাউন এলাকায় বাবার সঙ্গে সিমেন্টের বস্তা বোঝাই লরি নিয়ে এসেছিলাম। লরি থেকে বস্তা নামিয়ে বাবা সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎই আর একটি লরিচালক মত্ত অবস্থায় বাবার পেটের উপর দিয়ে লরি চালিয়ে দেয়। ওই চালককে ধরার চেষ্টা করলেও লরি নিয়ে পালিয়ে যায় সে।’’ স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ঠিক বাইরে আশঙ্কাজনক হয়ে পড়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। আমার মতো অনেকেই চিকিৎসকদের ডেকে আনতে হাসপাতালের ভিতরে গিয়েছিলাম। কিন্তু গেটে তালা মেরে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ রকম অমানবিক কাজের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধিক্কার জানাই।’’
এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশেই কার্যত দাঁড়িয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের দাবি, রোগীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাই চিকিত্সা করানোর সুযোগই ছিল না।
বুধবার ওই বৃদ্ধের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।