লাঠি হাতে যুবকেরা। নিজস্ব চিত্র
শান্তি মিছিলের নামে লাঠি হাতে মিছিল করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভাঙড় ২ ব্লকের চালতাবেড়িয়া এলাকার ঘটনা। মিছিল থেকে স্থানীয় বাসিন্দা ও আইএসএফ কর্মীদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
গত মঙ্গলবার দুপুরে চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের সাহাজি পাড়ায় রান্না করতে গিয়ে রান্নাঘরের মধ্যে মজুত রাখা বোমা ফেটে জখম হন আসমা সাহাজি নামে এক গৃহবধূ। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই গৃহবধূর দুই ছেলে এবং দেওর এলাকায় আইএসএফ কর্মী বলে পরিচিত। এই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। দিন কয়েকের মধ্যেই ওই এলাকায় একটি মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন রয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচনের আগে আইএসএফ কর্মীরা বাড়ি বাড়ি বোমা, বন্দুক মজুত করছে। সেই বোমা ফেটেই ওই মহিলা জখম হন বলে দাবি তাদের।
আইএসএফের দাবি, ওই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচনে তৃণমূল কোনও প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না। তাই ভোট বানচাল করতে এবং এলাকা অশান্ত করতে পরিকল্পিতভাবে নোংরামি করছে। আইএসএফ কর্মীদের ফাঁসাতেই রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের লোকজন বাড়িতে ঢুকে রান্নাঘরে বোমা লুকিয়ে রেখে যায় বলে অভিযোগ।
এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় শান্তি মিছিল করা হয়। মিছিলের পেছন দিকে বেশ কিছু যুবক লাঠি হাতে আইএসএফ কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে বলে অভিযোগ।
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “সামান্য একটা মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করছে। আমাদের দলীয় কর্মীদের ভয় দেখাতে শান্তি মিছিলের নামে লাঠি নিয়ে মিছিল করছে। আমাকে আমার বিধানসভা এলাকায় ঢুকতে দেবে না বলে হুমকিও দিচ্ছে। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিলে আমি দিল্লি যাব। প্রয়োজনে আমি এনআইএ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দ্বারস্থ হব।” এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী রবিবার এলাকায় শান্তি মিছিল করবেন বলে জানান নওশাদ।
ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ইসলাম ও তাঁর পুত্র হাকিমুল ইসলামের নেতৃত্বে এ দিন মিছিল হয়। হাকিমুল ইসলাম বলেন, “আমরা মিছিলের প্রথম সারিতে ছিলাম। পিছনের দিকে কী হয়েছে তা জানা নেই। তবে এলাকায় আইএসএফের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কিছু মানুষ আমাদের মিছিলে পা মেলান। তাঁদের কারও হাতে লাঠি থাকতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তৃণমূলের কারও কারও দাবি, দলীয় ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করার সময় অনেকে পতাকা খুলে মাথায় বাঁধে। যার ফলে তাঁদের হাতে ঝান্ডার লাঠি ছিল।