বন্ধের মুখে এলাকার পুরনো স্কুল। নিজস্ব চিত্র।
পড়ুয়ারা বলছে, শিক্ষকেরা ভালই পড়ান। শ্রেণিকক্ষ ভাল। পানীয় জলের সু-বন্দোবস্ত। রয়েছে কম্পিউটারও। তবু পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র ৪৫। আর শিক্ষক রয়েছেন ১১ জন! ছাত্রের অভাবে বন্ধ হতে বসেছে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার নামী একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল।
গোবরডাঙা পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে শ্রীচৈতন্য বিদ্যালয়। ১৯৬৬ সালে তৈরি হওয়া ওই স্কুলের সামনে সবুজ মাঠ। নতুন করে রং করা হয়েছে ক্লাসঘর। স্কুলের সামনে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্ত মঞ্চ। রয়েছে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। আছে পড়ুয়াদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থাও।
এত সব সত্ত্বেও পড়ুয়া নেই এই স্কুলে। কোনও অশিক্ষক কর্মীও নেই। কর্মী না থাকায় স্কুলের তালা খোলা থেকে বন্ধ, যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকেরাই। স্কুল শুরু, টিফিন, ছুটির ঘণ্টাও বাজান তাঁরা। অনেক চেষ্টা করেও পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়েনি। তাই বন্ধ হতে চলেছে এলাকার এই পুরনো স্কুল।
পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া সংখ্যা মাত্র দুই। সেই দুই ছাত্র জানাচ্ছে, শিক্ষকেরা খুব যত্ন নিয়ে পড়ান। তবু কেন ছাত্র বাড়ে না? শুনেই স্কুলের প্রবীণ এক শিক্ষক স্মৃতি রোমন্থন করতে বসেন। জানান, এক সময় এই স্কুলেই সাড়ে পাঁচশোর উপর পড়ুয়া পড়াশোনা করত। তাদের কোলাহলে গমগম করত স্কুল চত্বর। সে সব এখন অতীত।
কেন এমন হল? স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌত্রিক ভট্টাচার্যের দাবি, আসলে করোনা অতিমারির পর থেকে স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে। ছাত্রদের স্কুলমুখী করতে শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন। কিন্তু তেমন লাভ হয়নি।
পুরনো এই স্কুলকে বাঁচাতে শিক্ষকদের প্রচেষ্টা প্রসংশা কুড়োলেও, তা বন্ধের ব্যাপারে কী কোনও ভাবনা রয়েছে স্কুল পরিদর্শকের? সব শুনে হাবড়া ১ নম্বর সার্কেলের ইনস্পেক্টর অরিজিতা দাস অধিকারী কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। স্কুলের প্রাক্তনীদের মনখারাপ। কেন বাঁচানো গেল না পুরনো এই স্কুলকে! প্রশ্ন তাঁদের।