বাঘিনীর সাথে দুই শাবক। সুন্দরবনের জঙ্গলে এরকমই ব্যাঘ্র শাবকদের ছবি আশা জাগিয়েছে বন দফতরের।
বছর দুয়েক আগে (২০২১-’২২) সুন্দরবনে ১০১টি বাঘের থাকার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। সেই সংখ্যা আরও কিছুটা বেড়েছে বলেই সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের দাবি।
গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে ফের বাঘ গুনতে ক্যামেরা বসানো হয় সুন্দরবনের জঙ্গলে। সেই ছবি বিশ্লেষণ করেই বন দফতরের দাবি, এক ধাক্কায় অনেকটাই বংশবৃদ্ধি ঘটেছে বাঘের। এক বছরের কম বয়সি শাবকদের গণনায় ধরা হয় না। এ বারের ছবিতে এই বয়সি বেশ কিছু শাবক দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি, ১ থেকে ৩ বছর বয়সি বাঘের ছানার দেখাও মিলেছে। সেই সংখ্যাটা প্রায় ২০ শতাংশের কাছাকাছি। তবে, সুন্দরবনের জঙ্গলে বর্তমানে বাঘের সঠিক সংখ্যা কত, সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি বনকর্তারা।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “যখন বিড়াল প্রজাতির কোনও প্রাণী যথেষ্ট পরিমাণ শাবকের জন্ম দেয়, তখন বুঝতে হবে, তারা নিরাপদ রয়েছে। সুস্থ প্রজনন করতে সক্ষম হচ্ছে। এ বারের ক্যামেরার ছবিতে আমরা জঙ্গলে প্রচুর ব্যাঘ্র শাবকের দেখা পেয়েছি। বাঘের সংখ্যা যেমন আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে, তেমনই এত শাবকের কারণে আগামীতে বাঘের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আমাদের অনুমান।”
চার বছর অন্তর দেশে বাঘ গণনার কাজ হয়। জঙ্গলে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসিয়ে বাঘেদের গতিবিধির ছবি তোলা হয়। সেই ছবি বিচার-বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করে বন দফতর। দেশের সব ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে এই কাজ করা হয়। কাজ শেষে বাঘের ছবি বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্য প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার। গত কয়েকটি বাঘসুমারিতেই সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়তে দেখা গিয়েছে। ২০১৮ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ৮৮টি। ২০২২ সালে তা আরও বেড়ে ১০০ পার করে।
কেন্দ্রীয় গণনার পাশাপাশি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফেও প্রতি বছর নিজেদের মতো করে একই ভাবে জঙ্গলে ক্যামেরা বসিয়ে এলাকায় বাঘের পরিসংখ্যান নেওয়া হয়। প্রকল্প সূত্রের খবর, গত বছর নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সেই কাজ শুরু হয়। জঙ্গলের মোট ৭৩২টি জায়গা চিহ্নিত করে প্রতি জায়গায় দু’টি করে মোট ১৪৬৪টি স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসানো হয়। গত কয়েক মাস ধরে সেই ক্যামেরার ছবি বিশ্লেষণ করে খুশি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্তারা।