অসুস্থ শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতীকী চিত্র।
টানা জ্বর, সঙ্গে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট। গত কয়েকদিন ধরে দুই ২৪ পরগনার বহু শিশুর মধ্যে দেখা যাচ্ছে এমন উপসর্গ। বিশেষ করে দু’বছরের কম বয়সি শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বহু শিশু এই ধরনের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হচ্ছে।
রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে এই ধরনের সমস্যায় মৃত্যু হয়েছে ১১টি শিশুর। তার মধ্যে ভাঙড়ের এক ছ’মাসের শিশু রয়েছে। ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি ছিল সে। দেগঙ্গার এক বছর তিনেকের শিশুরও মৃত্যু হয়েছে কলকাতার শিশু হাসপাতালে। পরিবার সূত্রের খবর, জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল সে। এ প্রসঙ্গেই সামনে আসছে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণের কথা। চিকিৎসকেরা বলছেন, অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণে এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসক মহলে।
দুই জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই ভাইরাসে আক্রান্ত কারও খোঁজ মেলেনি। তবে, দফতরের তরফে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলিকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তৈরি রাখা হচ্ছে হাসপাতালগুলিও।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক জয়ন্তকুমার সুকুল জানান, অ্যাডিনোভাইরাস মোকাবিলা নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু গাইডলাইন বলা হয়েছে। সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ক্যানিং মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক রাহুল সরকার বলেন, “ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। শিশুদের জ্বরের বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কাকদ্বীপ মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক রায় বলেন, “কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সাধারণ শয্যার ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু) ও ভেন্টিলেটর প্রস্তুত আছে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, “জ্বর, সর্দি, কাশি, নিয়ে অনেকেই ভর্তি হচ্ছে। কিন্তু অ্যাডিনোভাইরাস পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে সতর্ক করা হচ্ছে।”
বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল জানান, এই সময়ে ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি হয়। এ বার হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা গতবারের তুলনায় সামান্য বেশি। ভাইরাসজনিত জ্বরের পদ্ধতি মেনেই চিকিৎসা চলছে।