—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত বছর জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এ রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল ১৯৮২। চলতি বছরে ওই একই সময়কালে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৪২। অর্থাৎ, গত বারের মতো এ বছরেও মশাবাহিত ওই রোগের প্রকোপ রাজ্যে একই রকম বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
বর্ষা পুরোদমে আসার আগেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী বলে পর্যবেক্ষণ স্বাস্থ্য দফতরেরও। তবে এ বারে প্রথম থেকেই কলকাতাকে পিছনে ফেলে তালিকার এক নম্বরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। তার পরেই রয়েছে হুগলি ও মুর্শিদাবাদ। এই তিনটি জেলার পরেই রয়েছে কলকাতা। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এ বার এখনও পর্যন্ত সংক্রমণের ধারাবাহিকতা কিন্তু শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়। বরং জেলা বা গ্রামেও যে ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হয়েছে, তা স্পষ্ট।’’
স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৪২ জন। যা এক-এক সপ্তাহে লাফিয়ে বাড়ছে। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘বৃষ্টি শুরু হতেই মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গি আক্রান্তের লেখচিত্র আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।’’
সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনায় ২৭৩, মুর্শিদাবাদে ২৫৩, হুগলিতে ২০০, কলকাতায় ১৫৭, নদিয়ায় ১৫২, বীরভূমে ৯৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আক্রান্তের নিরিখে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সাধারণত তালিকার উপরের দিকে থাকে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তেমনটা হয়নি। হাওড়ায় ৭৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫৮ জন আক্রান্ত।
স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সর্বপ্রথম জনসচেতনতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। যদিও প্রতি বছরের মতো বিগত বছরেও সেই বিষয়টিতে মারাত্মক খামতি দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। অধিকাংশ মানুষের উদাসীনতার ফলে ডেঙ্গিবাহী মশার (এডিস) লার্ভার আঁতুড়ঘর তৈরি হয়েছে যত্রতত্র। এখন থেকেই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে না রাখলে গত বারের মতোই বড়সড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ তিন সপ্তাহ ধরেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ও মুর্শিদাবাদে। শেষ দু’সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে বীরভূম ও হুগলিতে। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলা ও আলিপুরদুয়ারে শেষ সপ্তাহে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বেড়েছে।