আপাতত ভরসা আলুর চপেই। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
সন্ধ্যায় তেলেভাজার দোকানে দাঁড়িয়ে গরম গরম পেঁয়াজি খাওয়ার ইচ্ছে আপাতত উধাও। কারণ, বনগাঁ মহকুমার অনেক তেলেভাজার দোকানে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে পেঁয়াজি তৈরি। কারণ, অবশ্যই পেঁয়াজের অগ্নিমূল্য।
অনেক দোকানে পেঁয়াজি তৈরি বন্ধ হলেও কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। তবে একলাফে দাম বেড়ে গিয়েছে। বনগাঁ শহরের অভিযান সঙ্ঘের মোড় এলাকায় তেলেভাজার দোকান গৌতম চৌধুরীর। তিনি বলছিলেন, ‘‘পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন একটা পেঁয়াজির দাম নিতে হচ্ছে ৮ টাকা। দিন কয়েক আগেও এক পিস পেঁয়াজি ৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন পেঁয়াজি বিক্রি কমে গিয়েছে অনেকটাই।’’
ব্যবসায়ীরা জানালেন, তেলেভাজার প্রতিটি পদ তৈরি করতে কমবেশি পেঁয়াজ প্রয়োজন হয়। পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলেও ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে পাচ্ছেন না। দাম বাড়ালে বিক্রি কমে যাবে। চাহিদা কমবে। বনগাঁ শহরের স্টেডিয়াম মোড়ের কাছে তেলেভাজার দোকান বিশ্বনাথ রুদ্র। তিনি বলেন, ‘‘পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজি তৈরি বন্ধ করে দিয়েছি। তেলেভাজার সঙ্গে যে স্যালাড দেওয়া হয়, তাতেও পেঁয়াজ দিতে পারছি না।’’
বনগাঁয় এখন কিলো প্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৫০ টাকায়। গত বছরও এই সময়ে পেঁয়াজ ছিল কিলো প্রতি ৮০ টাকা। বাড়িতে সন্ধ্যার সময়ে পেঁয়াজি এনে মুড়ির সঙ্গে খাওয়া অনেকেরই অভ্যাস। সে সবও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দোকান থেকে এগরোল কিনলে স্যালাডে দেওয়া হচ্ছে না পেঁয়াজ। একই ঘটনা ঘটেছে বিরিয়ানি ও চাউমিন কিনলেও।
বাড়িতে রান্নার স্বাদ ফিকে হতে শুরু করেছে। মাছ, মাংসে পেঁয়াজ দিতে হয়। কিন্তু দাম শুনে ক্রেতা বিক্রেতাদের মুখ ভার। এক পেঁয়াজ বিক্রেতার কথায়, ‘‘পেঁয়াজের জোগান কম। বাইরে থেকে পেয়াঁজ আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ক্রেতারাও পেঁয়াজ কেনা কমিয়ে দিয়েছেন।’’ লোকজনের বক্তব্য, ‘‘বাড়িতে দৈনন্দিন রান্নায় পেঁয়াজ অপরিহার্য হয়ে গিয়েছে। এখন পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না হচ্ছে।’’ বিক্রেতারা জানালেন, গত বছর এই সময়ের পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা। অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজে দাম বেড়ে যাওয়ায় পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানিও বন্ধ রয়েছে। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চোরাপথে বস্তাবন্দি করে পাচারকারীরা পেঁয়াজ চড়া দামে বাংলাদেশে পাচার করছেন। সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাপথে সাইকেল করে তারা পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছে।