আইসিসিইউ না থাকায় সমস্যায় রোগীরা

হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকেরার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬২ শতাংশ। শেষমেশ বাঁচানো যায়নি তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা  

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:০৫
Share:

যত্রতত্র: মৃতের বাড়ির এলাকায় পড়ে আবর্জনা। ছবি: সুজিত দুয়ারি

উচ্চ রক্তচাপ ও তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে শুক্রবার রাত পৌনে ২টো নাগাদ সকেরা সর্দারকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। ক’দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন মহিলা। আগেও ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। বাড়ি যাওয়ার পরে অবস্থা খারাপ থাকায় ফের আনা হয় হাসপাতালে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকেরার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬২ শতাংশ। শেষমেশ বাঁচানো যায়নি তাঁকে। দ্বিতীয় বার হাসপাতালে আনার ঘণ্টা দু’য়েক পরেই মারা যান। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ৯০ শতাংশের কম থাকলেই মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। ওই বৃদ্ধার ছিল মাত্র ৬২ শতাংশ। এ ধরনের রোগীকে দ্রুত আইসিসিইউতে রাখা দরকার। এ ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়নি।’’

হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উপরে কয়েক লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল। হাবড়া ছাড়াও অশোকনগর, গাইঘাটা, বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর, গোবরডাঙার মানুষ এখানে আসেন। গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে আইসিসিইউ বা এইচডিইউ ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। সকেরার মতো হাসপাতালে আসলে তাঁদের ‘রেফার’ করে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে চিকিৎসকদের কাছে। পথে রোগীর মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক রোগীর অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য থাকে না।

Advertisement

চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে হাবড়া, অশোকনগর এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছে। ডেঙ্গি আক্রান্ত বহু রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, আইসিসিইউ থাকলে ডেঙ্গি রোগীদের চিকিৎসা আরও সহজ হয়। অন্যত্র বদলির প্রয়োজন হয় না। মৃত্যুর ঘটনাও খানিকটা রোধ করা সম্ভব। কারণ, ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রেও তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। ডেঙ্গির কারণেই এ বছর হাসপাতালে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাপ করার মেশিন আনা হয়েছে।

হাবড়া হাসপাতালে রয়েছে মুমূর্ষু শিশুদের চিকিৎসার জন্য এসএনসিইউ। কিন্তু সেখানে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে মুমুর্ষ শিশুদেরও অন্যত্র রেফার করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা রয়েছে। তবে রোগীদের তা ব্যবহার করতে হলে আরও কিছু ব্যবস্থা এর সঙ্গে যুক্ত করার প্রয়োজন।

শঙ্কর বলেন, ‘‘হাসপাতালে নয় শয্যার আইসিসিইউ তৈরির কাজ চলছে। ৬-৭ মাসের মধ্যে ওই কাজ শেষ হওয়ার কথা। ওই ব্যবস্থা চালু হলে সকেরার মতো রোগীদের উপযুক্ত চিকিৎসা সম্ভব হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement