নওশাদ ভাঙড়ে আসায় সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: সামসুল হুদা
বিয়াল্লিশ দিন হাজতবাসের পরে সপ্তাখানেক আগে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকী। ৫০ দিন পরে রবিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ভাঙড়ে গেলেন ওই আইএসএফ বিধায়ক। ফুলে-মালায় তাঁকে বরণ করে নিলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। হুডখোলা গাড়িতে ঘুরলেন নওশাদ। বহু গাড়ি-বাইকে তাঁর সঙ্গ নিলেন দলের লোকজন। নওশাদকে দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। দলীয় কর্মীরা নিজেদের মধ্যে আবির খেলেন। মিষ্টি বিলি করা হয়।
এই উচ্ছ্বাস দেখে নওশাদ নিজের আবেগ চেপে রাখতে পারেননি। নওশাদ বলেন, ‘‘৪২ দিন জেলে বন্দি থাকার পর ভাঙড়ে এসে মানুষের এমন ভালবাসা পাব ভাবিনি। বদনাম করার জন্য অন্যায় ভাবে আমাকে জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের আবদার মেনে আমাকে এলাকা পরিক্রমা করতে হল।’’
এ দিন দু’তিন হাজার দলীয় কর্মী সমর্থককে নিয়ে ভাঙড়-২ ব্লকের হাতিশালা, পাকাপোল, গাবতলা, সাতুলিয়া, কচুয়া, শানপুকুর, পানাপুকুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, শোনপুর, কাশীপুর হয়ে মাঝেরাইট গ্রামে যান নওশাদ।
পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নওশাদ কোনও অনুমতি ছাড়াই ‘র্যালি’ করেছেন। ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি হাই কোর্টে বিচারাধীন থাকলেও রায় না হওয়া পর্যন্ত ওই ধারা বলবৎ থাকছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত নওশাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। সব দিক খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ নওশাদ অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি কোনও র্যাসলি করেননি। মানুষের আবদারেই ঘুরপথে তাঁকে মাঝেরাইটে দলীয় কর্যালয়ে যেতে হয়।
সম্প্রতি ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সওকত মোল্লাকে দলের পক্ষ থেকে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। এ নিয়ে এ দিন কটাক্ষ করেছেন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক হলে ভাল হত। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতাদের জলাভূমি ভরাট, সিন্ডিকেট রাজ, আবাস প্লাসে দুর্নীতি, তোলাবাজি নিয়ে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়ে তাঁরা জানতে পারতেন।’’
পক্ষান্তরে, সওকত বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষের প্রতি আমার বিশ্বাস রয়েছে। তাঁরা ভালমন্দ বুঝতে শিখেছেন। দেখেছেন, গত দু’বছরে উন্নয়ন কতটা হয়েছে! সময় কথা বলবে।’’ এ দিন হুগলির ফুরফুরায় গিয়ে পিরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করেন সওকত। ফুরফুরাতেই নওশাদের বাড়ি।
গত ২১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে শেষ বার ভাঙড়ে এসেছিলেন নওশাদ। সে দিন হাতিশালা এবং কলকাতায় গোলমাল হয়। গ্রেফতার হন নওশাদ-সহ বেশ কয়েকজন দলীয় কর্মী-সমর্থক।