প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার কমল সরকার। — নিজস্ব চিত্র।
রাতের অন্ধকারে জাতীয় স্তরের প্রতিবন্ধী ক্রিকেট খেলোয়াড়কে মারধরের অভিযোগ উঠল বরাহনগরে। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের লোকজন মারধর করে বরাহনগরের নর্দান পার্কের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার কমল সরকার ওরফে কাজুকে। সম্প্রতি তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি। আক্রান্ত কাজু জানিয়েছেন, তিনি পুলিশে অভিযোগ জানাবেন।
খুব সম্প্রতি বরাহনগরে বিজেপির সভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বরাহনগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নর্দান পার্কের বাসিন্দা কমল। এলাকায় তিনি কাজু নামে পরিচিত। বুধবার রাতে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় বরাহনগর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তনু মজুমদার ওরফে মেজোর অনুগামীরা তাঁকে উত্ত্যক্ত করে। শুরু হয়ে যায় বচসা। অভিযোগ, বচসা ক্রমশ ধাক্কাধাক্কির রূপ নেয়। তাঁকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করেন কাজু। অভিযোগ, প্রতিবাদ করতেই তৃণমূল কাউন্সিলার শান্তনু এসে তাঁকে মারধর করতে থাকেন। ঘটনায় আতঙ্কিত আক্রান্ত। কান্নায় ভেঙে পড়ে কমল বলছেন, ‘‘কেন যে আক্রান্ত হলাম, আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। রাতে বাড়িতে ফিরছিলাম। গলির মোড়ে মেজোর অনুগামীরা আমাকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ওদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ি। ধাক্কাধাক্কি হয়। হঠাৎ কিছুই না জেনেশুনে মেজো আমাকে মারতে আরম্ভ করল। আমাকে এ ভাবে মারল, আমি আতঙ্কিত। কোনও দিন ভাবতে পারিনি, মেজো আমার গায়ে হাত দেবে!’’ পরিস্থিতি এমন যে বাড়ি থেকে বেরোতেও ভয় পাচ্ছেন তিনি।
কিন্তু কেন নিগৃহীত হলেন জাতীয় স্তরের প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার? কমলের অনুমান, তিনি সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই কারণেই হয়তো মার খেলেন। কমল বলেন, ‘‘২৩ তারিখ শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। সেটাই মনে হয় আমার অপরাধ।’’ তৃণমূলের আবার দাবি, কাজুর স্ত্রী তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত।
মারধরের ঘটনাকে সমর্থন করেনি স্থানীয় তৃণমূল। বরাহনগর পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল অঞ্জন পাল বলেন, ‘‘কমলকে আমি চিনি। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ওর স্ত্রী তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। কমল শুনলাম বিজেপি করছিল। বিজেপি করলেই তাঁকে মারতে হবে, এ রকম মানসিকতা তৃণমূলের নেই। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বার্তা পাঠাচ্ছেন, কোনও অবস্থাতেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে অসহযোগিতা করা যাবে না। কারও ওপর যেন অত্যাচার না হয়। আমাদের মতো স্থানীয় স্তরের নেতৃত্বকে অবশ্যই সংযত থাকতে হবে। কী হয়েছে আমার জানা নেই। তবে, আমাদের কাউন্সিলর শান্তনুর সঙ্গে আমি ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলব। কথা না বলে এ বিষয়ে মন্তব্য করব না।’’
মারধরের বিষয়ে এখনও থানায় লিখিত ভাবে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। যদিও নিগৃহীত ক্রীড়াবিদের দাবি, তিনি থানায় অভিযোগ জানাবেন।