—প্রতীকী ছবি।
প্রায় তিন দিন ধরে খোঁজ মিলছিল না ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তির। শেষে আবাসনের লিফ্টের গর্ত থেকে উদ্ধার হল তাঁর পচাগলা দেহ। বুধবার পানিহাটির ঘটনা।
পুলিশ জানায়, ওই প্রৌঢ়ের নাম পরিতোষ দে (৬২)। তিনি সুখচর গির্জা মোড়ের কাছে ডাক্তার গোপাল চ্যাটার্জি রোডের আবাসনে থাকতেন। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জেনেছে, দীর্ঘ দিন ধরে ওই আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন পরিতোষ। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে অন্যত্র থাকেন। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত সোমবার দুপুরের পর থেকে প্রৌঢ়কে আর দেখা যায়নি। কেন দেখা যাচ্ছে না, তা নিয়ে অবশ্য কারও কোনও সন্দেহ হয়নি। কারণ, সকলেই ভেবে নিয়েছিলেন, কোথাও হয়তো গিয়েছেন পরিতোষ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার দুপুর থেকে আবাসনে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। কোথা থেকে তা আসছে, প্রথমে বুঝতে পারেননি আবাসিকেরা। কিন্তু বিকেলের দিকে পচা গন্ধ বাড়তে শুরু করলে সন্দেহ দেখা দেয়। সকলে মিলে গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখেন, লিফ্টের গর্তে পরিতোষের দেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ গিয়ে পচাগলা দেহটি উদ্ধার করে।
তদন্তে নেমে পুলিশ আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে। তাতে দেখা গিয়েছে, ২৯ এপ্রিল দুপুরে পরিতোষ চারতলা থেকে হেঁটে তেতলায় নামেন। এর পরে তিনি লিফ্টের সামনের কোল্যাপসিবল গেট ধরে টানতেই সেটি খুলে যায়। তখন ভিতরে পা বাড়াতেই নীচে পড়ে যান ওই প্রৌঢ়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, পাঁচতলা আবাসনটির লিফ্টে সম্প্রতি কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিয়েছিল। সেই কারণেই তেতলায় লিফ্টটি না থাকলেও সেটিতে ঢোকার কোল্যাপসিবল দরজা টানতেই খুলে যায়। আর সেখানে যে লিফ্ট নেই, সেটি বুঝতে না পেরে পা বাড়াতেই সোজা নীচে পড়েন প্রৌঢ়। তবে ভারী কিছু পড়ার শব্দ পাননি বলেই দাবি অন্য বাসিন্দাদের।
এমনকি, পরবর্তী সময়ে তেতলার দরজা খোলা দেখে অন্যেরা তা বন্ধ করে দিলেও কেউ আর নীচের গর্তে খেয়াল করেননি। লিফ্টও তার পরে ওঠানামা করেছে। তবে ওই দিন গন্ধ বেরোনোর পরে সন্দেহ হওয়ায় চারদিকে খোঁজ করতে গিয়েই বিষয়টি সামনে আসে। প্রৌঢ়ের পরিজনেরা অবশ্য কেউ কোনও কথা বলতে রাজি হননি।