মায়ানমারের ইরাবতী ডলফিন
বকখালির সমুদ্র সৈকত থেকে উদ্ধার হল মায়ানমারের ইরাবতী ডলফিন (ইরাওয়াডি ডলফিন)। শনিবার সকালে বকখালির কাছে হেনরিজ আইল্যান্ডের সমুদ্র সৈকত থেকে ডলফিনটির মৃতদেহ উদ্ধার করেন বন দফতরের কর্মীরা। এর পর ওই সমুদ্র সৈকতেই ডলফিনের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। বনকর্মীদের অনুমান, সমুদ্রে ট্রলার কিংবা জাহাজের ধাক্কাতেই মৃত্যু হয়েছে সামুদ্রিক প্রাণীটির।
স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে হেনরিজ আইল্যান্ডের সৈকতে ভেসে আসে ডলফিনটি। খবর পেয়েই নর্থ বকখালি বিটের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে হাজির হন। ডলফিনের গায়ে আঘাতের চিহ্ন থাকার পাশাপাশি দেহে পচনও ধরতে শুরু করেছিল বলে দাবি বন দফতরের। এর পর নামখানা ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্য আধিকারিককে ডেকে সৈকতেই ডলফিনের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।
বন দফতর জানিয়েছে, মৃত ডলফিনটি প্রায় আট ফুট লম্বা এবং চওড়ায় প্রায় চার ফুট। ওজন ১২০ কেজির আশপাশে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মন্ডল বলেন, ‘‘ডলফিনটি উদ্ধার হওয়ায় পর দেখা যায়, দেহে পচন ধরেছে। আমাদের অনুমান, কয়েক দিন আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল। পরে ঢেউয়ে হেনরিজ আইল্যান্ডের সমুদ্রেতটে ভেসে আসে। এই প্রজাতির ডলফিনটি ইরাওয়াডি ডলফিন বা ইরাবতী ডলফিন নামে পরিচিত। গাঙ্গেয় ডলফিনের সঙ্গে ইরাবতীর বেশ কিছু গঠনগত পার্থক্য রয়েছে। গাঙ্গেয় ডলফিনের মুখের সামনে লম্বা চঞ্চু দেখা যায়। কিন্তু ইরাবতী ডলফিনের ক্ষেত্রে সেটি দেখা যায় না। এই প্রজাতির ডলফিনের মূল আবাসস্থল মায়ানমারের ইরাবতী নদী। তবে ভারত ও বাংলাদেশের সুন্দরবনেও এদের অস্তিত্ব মেলে।’’
বকখালির বন কর্মীদের একাংশ বলছেন, এত দিন সমুদ্রে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাই ট্রলার চলাচলও বন্ধ ছিল সমুদ্রে। এখন প্রজননের সময় হওয়ায় সমুদ্রে অবাধ বিচরণ শুরু করেছে সামুদ্রিক প্রাণীরা। আর এর মধ্যে সরকারি নিষেধাজ্ঞাও উঠে যাওয়ায় সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে শুরু করেছে ট্রলারগুলি। ওই ট্রলারের ধাক্কায় ডলফিনটির প্রাণহানি হতে পারে বলে দাবি তাঁদের।