মুকুলের পিছু পিছুই তৃণমূলে ফিরলেন তপন। —ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। আবার তাঁকে অনুসরণ করেই তৃণমূলে ফিরলেন তপন সিন্হা (খোটে)। এক সপ্তাহ আগেই নিজের পদত্যগপত্র বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ শনিবার সন্ধ্যায় গোবরডাঙা টাউনহলে তৃণমূলের একটি কর্মসূচি চলাকালীন, জোড়াফুলে প্রত্যাবর্তন করেন গত পাঁচ বছর ধরে জেলায় বিজেপি-র সহ-সভাপতি দায়িত্বে থাকা তপন।
শারীরিক অসুস্থতার কথা বললেও, দলের হয়ে কাজ করতে পারছেন না বলেই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার সময় জানিয়েছিলেন তপন। শনিবার তৃণমূলে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সংসদীয় রাজনীতিতে দল পরিবর্তন স্বাভাবিক ঘটনা। ২০১৭-র ১৩ নভেম্বর বিজেপি-য়ে যোগ দিয়েছিলাম। তার একটা প্রেক্ষিত ছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে গত পাঁচ বছরে বিজেপি-র সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারিনি। ব্যক্তিগত সঙ্ঘাত নয়, এটা আদর্শের সঙ্ঘাত।’’
বিজেপি মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তপন। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। মুকুল রায়ের সান্নিধ্যে সঙ্গে অনেক জায়গায় গিয়েছি। রাজনীতিতে করতে গেলে সহমমর্মিতার প্রয়োজন, সকলকে নিয়ে চলতে হয়ে বলেই জেনেছি। কিন্তু সেটা উপলব্ধি করতে পারছিলাম না বিজেপি-তে। মুকুলদাও পারছিলেন না। বিজেপি মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করছে। আমি তৃণমূলে আসায় মানুষের কতটা লাভ হবে জানি না। তবে ব্যক্তিগত ভাবে একটা অসহনীয় পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসতে পারলাম।’’
গত ১১ জুন সপুত্র মুকুল বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার দিনই বিজেপি থেকে ইস্তফা দেন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তপন। বনগাঁয় বিজেপি-র সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনস্পতি দেব তার প্রাপ্তিও স্বীকার করেন। যদিও বনগাঁয় বিজেপি-র সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে বিজেপি-তে এসেছিলেন উনি। দল ক্ষমতায় আসেনি। নিজের লোকসান হতে পারে দেখে তাই তৃণমূলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’’
তার পর থেকেই তপনের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তা নিয়ে এক সপ্তাহ তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। জোড়াফুল শিবিরও তাঁকে ফেরত নেওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দেয়নি। সেই জল্পনার মধ্যেই শনিবার তৃণমূলের প্রত্যাবর্তন ঘটল তপনের।