ক্ষতি: ভাঙছে পাড়। চিন্তিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ণিমার কটালের জলস্ফীতিতে ফের বিপর্যস্ত মৌসুনি দ্বীপের পর্যটন। স্থানীয় সূত্রের খবর, কটালের জেরে জল বাড়ায় মৌসুনি দ্বীপের বেশ কয়েকটি কটেজের সামনে ধস নেমেছে। কয়েকটি দুর্বল নদীবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। বাঁধের ফাটল দিয়ে নোনা জল ঢুকছে এলাকায়।
চিনাই, মুড়িগঙ্গা, বটতলা নদী ও সমুদ্রে-ঘেরা ছোট দ্বীপ মৌসুনি। এই দ্বীপের সল্টঘেরিতে ২০১৭ সালে হাতেগোনা কয়েকটি কটেজ দিয়ে শুরু হয়েছিল পর্যটন ব্যবসা। প্রথম দিকে তেমন পর্যটকের দেখা না মিললেও ধীরে ধীরে জায়গাটি পরিচিতি পায়। সল্টঘেরির ঝাউয়ের জঙ্গলে নির্জন পরিবেশে পাখির কলতান শুনে, সমুদ্রের ঢেউ দেখতে দেখতে ছুটি কাটাতে আসতেন অনেকেই। কিন্তু আমপান-ইয়াসের পরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল মৌসুনি দ্বীপ। ঘরবাড়ি, চাষের জমি নষ্ট হয়েছিল। পর্যটনের জন্য গড়ে ওঠা কটেজগুলিও তছনছ হয়ে গিয়েছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল এলাকার পর্যটন ব্যবসা। কিন্তু কটালে ফের তা ধাক্কা খেল।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা কটেজ মালিক তপন মণ্ডল জানান, পূর্ণিমার কটালের জেরে প্রায় ৩০টি কটেজের সামনে ধস নেমেছে। তিনি বলেন, “প্রশাসনকে আমরা বার বার জানিয়েছি, কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করার জন্য। কিন্তু হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর এলে বেহাল বাঁধের কাজ হয়। পরে আবার সেই বাঁধ ধুয়ে চলে যায়। চট আর মাটির বাঁধ কতদিন টিকবে।” স্থানীয় বাসিন্দা বাপি বেগ বলেন, “কংক্রিটের বাঁধ না হলে মৌসুনি দ্বীপকে রক্ষা করা যাবে না।”
মৌসুনি ক্যাম্প ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চয়নকুমার ভট্টাচার্য বলেন, “পূর্ণিমার কটালের জেরে মৌসুনির পর্যটন ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়েছে। দীর্ঘ দু’বছর কোনও পর্যটক আসেননি। কয়েক মাস হল পর্যটক আসছিলেন। কিন্তু এই ক্ষতির ফলে সংখ্যাটা ফের কমবে।”
নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন, ‘‘কটালে মৌসুনি দ্বীপের কয়েক জায়গায় নদীবাঁধ ও পর্যটনকেন্দ্রের সামনে ধস নেমেছে। সেচ দফতর মেরামতির কাজ শুরু করেছে। আশা করি, খুব তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হবে।’’