প্রতীকী ছবি
বর্তমানে প্রসূতি মা ও সদ্যোজাত শিশুদের জন্য উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা সুন্দরবন এলাকায় নেই। সুন্দরবনের গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, জীবনতলা এমনকি, উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি এলাকারও বহু মানুষ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের উপরেই ভরসা করেন। এবার প্রসূতি ও সদ্যোজাত শিশুদের কথা মাথায় রেখেই ক্যানিং হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’। ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এই নতুন চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হয়ে যাবে। ২০১৪ সালের ১ জুলাই ডায়মন্ড হারবারের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্যানিংয়ে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব তৈরির জন্য প্রথম প্রস্তাব দেন বিধায়ক শ্যামল। কিন্তু সেই প্রস্তাব তখন গৃহীত হয়নি। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে জোকায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে ফের প্রস্তাব দেন শ্যামল। এবার অবশ্য সুন্দরবনবাসীদের কথা ভেবে মঞ্জুর হয় বিধায়কের সেই আবেদন। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর গোসাবায় সরকারি অনুষ্ঠানে এসে ক্যানিংয়ের এই মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজ শুরু হয়। দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। বিভিন্ন জটিলতার কারণে কাজ শেষ হতে আরও বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। বর্তমানে পাঁচতলা ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ভবনের ভিতরে বিদ্যুৎ, পানীয় জলের সংযোগের কাজ চলছে। দ্রুত সেই কাজ ও শেষ হয়ে যাবে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
নয়া এই কেন্দ্রের জন্য প্রায় ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। ২৪২ শয্যা থাকবে এই কেন্দ্রে। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার বলেন, “ভবন তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের যাবতীয় আসবাব ও অন্যান্য যন্ত্র সামগ্রীর জন্য তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে।” বিধায়ক বলেন, “স্বাধীনতার পর সুন্দরবনবাসীর জন্য এত বড় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর প্রকল্প আগে হয়নি। প্রসূতি মা ও সদ্যোজাত শিশুদের সমস্ত ধরনের চিকিৎসা হবে। কোনও জটিল সমস্যার জন্য আর কলকাতার উপর ভরসা করতে হবে না।” ভবন তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে চললেও এই কেন্দ্র চালাতে সম্পূর্ণ আলাদা বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রয়োজন। তাই হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় সাব স্টেশন তৈরি করতে হবে। ইতিমধ্যেই তার জন্য জমি নির্ধারণ হয়েছে। দ্রুত সেই কাজ ও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জোর কদমে কাজ চলছে। সাব স্টেশন তৈরির কাজ শেষ হলেই এই মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব চালু করা সম্ভব হবে।” ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি মা ও সদ্যোজাত শিশুদের জন্য এই নতুন কেন্দ্র তৈরি হওয়ায় খুশি সকলে। ক্যানিংয়ের বাসিন্দা ফারুক সর্দার, দিবাকর সর্দার, স্বপ্না দাসরা বলেন, “মানবিক মুখ্যমন্ত্রী সুন্দরবনবাসীর কথা ভেবে এই প্রকল্প তৈরি করেছেন। এই হাসপাতাল চালু হলে সত্যিই এই প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতি মায়েরা অনেক ভাল পরিষেবা পাবেন।”