মৃত যুবকের মায়ের সঙ্গে কথা বলছে সংখ্যালঘু কমিশন।
পুলিশ হেফাজতে মারধরে ঢোলাহাটের যুবক আবু সিদ্দিক হালদারের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার তাঁর বাড়িতে এল রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের একটি দল। ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ হাসান ইমরান। আবুর বাবা ইয়াসিন হালদার কমিশনের সঙ্গে কথা বলেন। ইমরান তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান ইয়াসিন।
ইমরান বলেন, ‘‘ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে, পুলিশই দায়ী। প্রয়োজনে আমরা পুলিশ আধিকারিকদের ডেকে পাঠাব তদন্তের জন্য। আমরা আশাবাদী, পরিবার সুবিচার পাবে।”
কিছুদিন আগে চুরির অভিযোগে আবু গ্রেফতার হন। পুলিশ হেফাজতে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি জামিন পেলেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মারা যান। ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি। এ দিন দুপুরে ঘণ্টা খানেক আবুর বাড়িতে ছিলেন কমিশনের সদস্যেরা। তাঁদের কাছে আবুর পরিবারের অভিযোগ, চুরির টাকা, সোনা ভাগ করে নেয় পুলিশ। সেই দোষ আবুর ঘাড়ে চাপিয়ে দায়মুক্ত হতে চেয়েছিল তারা। চুরির দায় স্বীকার করার জন্য থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় তাঁকে। জোর করে আবুর কাকাকে দিয়ে পুলিশ অভিযোগ লেখায়। জামিন দেওয়ার জন্য থানার আইসি, তদন্তকারী অফিসার ঘুষ নেন। আরও অভিযোগ, আবুর মোটরবাইক, দু’টি ফোনও পুলিশ নিয়ে নেয়। কিন্তু ‘সিজ়ার লিস্ট’ দেয়নি। আবুর মৃত্যুর দিন ঢোলাহাট থানার আইসি কলকাতায় গিয়ে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে বলেছিলেন বলেও অভিযোগকরেন তাঁরা। কিন্তু পরিবারের কেউ সেই টাকা নেননি। আরও অভিযোগ, পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সিসি ক্যামেরা খারাপ বলে কোর্টে জানায় পুলিশ।
ঢোলাহাট থানা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। আবুর বাবা বলেন, “কমিশনের চেয়ারম্যান সব শুনে অবাক হন। আশ্বাস দিয়েছেন, দোষী পুলিশ আধিকারিকরা সাজা না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের পরিবারের পাশে থাকবেন। আমরাও চাই দোষীরা কঠোর শাস্তি পাক।”
বিকেলে ঢোলাহাট মোড়ে আইএসএফের নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ সভা হয়। উপস্থিত ছিলেন মৃতের পরিবারের সদস্যেরা। সভায় ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী বলেন, “আমরা চাই দোষীরা শাস্তি পাক। কিন্তু অপরাধীকে বাঁচাতে যদি পুলিশ ওই পরিবরকে ভয় দেখায়, তা হলে আমরা বুঝে নেব।’’