সুজিত বসু এবং লুজন চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
২৪ ঘণ্টা আগে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁকে। শনিবার সকাল হতেই ব্যাগপত্র নিয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু চলে এসেছেন গঙ্গাসাগর মেলায়। সেখানে ইডির অভিযান নিয়ে প্রশ্ন করতেই মন্ত্রীর জবাব, ‘‘লোকসভা ভোট আসছে। তাই এ সব চলবে।’’ আর তার পরই সুজিত কটাক্ষ করলেন তাঁর প্রাক্তন রাজনৈতিত ‘সতীর্থ’ সুজন চক্রবর্তীকে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘উনি কী করেন, না করেন, তা আমি ভাল জানি।’’
সুজিতের বাড়িতে ইডি অভিযান নিয়ে তৃণমূল একে বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখছে। সুজিত নিজেও তাই অভিযোগ করেছেন। তিনি আবার এ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেন। অন্য দিকে, সুজিতের বাড়িতে ইডি অভিযান নিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘যা রটে তার কিছু তো ঘটে।’’ আর তারই পাল্টা দিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘তাঁর (সুজন) সম্পর্কে আমি খুব ভাল জানি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যা রটে তার কিছু ঘটে। বটেই তো। উনি এটা খুব ভাল জানেন। কারণ, উনি কী করেন না করেন, তা আমি ভাল জানি। কিন্তু আমি কারও নামে বলতে চাই না।’’ এখানেই শেষ নয়। সুজনকে কটাক্ষ করে সুজিত বলেন, ‘‘ওই পার্টিটা করে এসেছি আমি। কী করেছে, না করেছে, সব জানা আছে আমার। উনি সিনিয়র। তাই বেশি না বলা ভাল। আসলে জুনিয়র মুখ খুললে... উনি নিজের আমলে এ সব করে এসেছেন। এঁরাই তো ডুবিয়েছেন পার্টিটাকে। আজ সাধু হয়ে সব বসে আছেন। সব জানি।’’
বস্তুত, নব্বইয়ের দশকে বেআইনি নির্মাণে মদত দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগে সুজিতকে বহিষ্কার করে সিপিএম। সুজিত সে সময় ছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ‘শিষ্য’। পরে ১৯৯৭ সালে দমদম পুরসভার নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে পরাজিত হন সুজিত। তারও পরে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০৯ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন তিনি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও তিনি জয়ী হয়েছে আবার মমতার মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন।
শুক্রবার সুজিতের বাড়ি থেকে ইডি বেরিয়ে যাওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘৪৫ বছর ধরে রাজনীতি করছি। সিপিএম করতাম। এলাকায় একটা মাঠের ব্যাপার নিয়ে দল ছেড়েছিলাম। তার পর নির্দল প্রার্থী হিসাবে জিতেছি। দশ বার জিতেছি। সাত বারের কাউন্সিলর। তিন বার বিধানসভায় জিতেছি। এক বার লোকসভা ভোটেও লড়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গে সুজিতের মন্তব্য, ‘‘ইডি জানিয়েছে যে আদালতের নির্দেশে তাঁরা কিছু তদন্ত করছেন। যে সময়ে পুর নিয়োগ হয়েছে বলা হচ্ছে, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। সেই ব্যাপারে কাগজপত্রও ওদের দিয়েছি।’’