সুজিত বসু। —ফাইল চিত্র।
এলাকার উন্নয়ন এবং স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে শনিবার সন্দেশখালি এলেন মন্ত্রী সুজিত বসু।
শাহজাহান-কাণ্ডের জেরে সন্দেশখালি বিধানসভা জুড়ে উন্নয়নের কাজে গত কয়েক মাসে বেশ কিছু প্রভাব পড়েছিল। তৃণমূলের সাংগঠনিক বিভিন্ন পদে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। সে পদ অনেক দিন ধরে শূন্য। এ বার লোকসভা ভোটেও তার কিছু প্রভাব পড়েছে বলে দলের অন্দরে মানেন অনেকে। তৃণমূল প্রার্থী প্রচুর ভোটে জয়ী হলেও সন্দেশখালি বিধানসভা থেকে তৃণমূল সাম্প্রতিক অতীতে এই প্রথম লিড পায়নি। বিজেপি প্রায় ৮ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল সন্দেশখালিতে।
এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু সন্দেশখালি এলেন দল ও সরকারের কাজ খতিয়ে দেখতে।
শনিবার দুপুরে সুজিতের নেতৃত্বে প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হয় সন্দেশখালি ১ ব্লক অফিসে। সুজিত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী, বসিরহাটের মহকুমাশাসক আশিস কুমার, সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো সহ সন্দেশখালির দু’টি ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ সব পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষেরা। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, স্বাস্থ্য দফতর, কৃষি দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী মূলত খোঁজ নেন, কত বাড়িতে পানীয় জল গিয়েছে। কত বাড়িতে পানীয় জলের পাইপ গেলেও জল যায়নি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক অনীশরঞ্জন ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী নির্দেশ দেন, সাত দিনের মধ্যে গোটা সন্দেশখালি জুড়ে কত বাড়িতে জল পাইপ লাইন গিয়েছে, কত বাড়িতে পাইপ যেতে বাকি আছে, কত বাড়িতে জল পাওয়া যাচ্ছে— এই সমস্ত তথ্য জমা দিতে। সেই সঙ্গে সন্দেশখালি ১ ও সন্দেশখালি ২ ব্লকে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা যাতে সঠিক ভাবে ব্যয় হয়, দ্রুত কাজ হয় সেই বিষয়টিও বিডিওদের দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘মন্ত্রী সুজিত বসু বৈঠকে বলেছেন, দ্রুততার সঙ্গে স্বচ্ছতা বজায় রেখে উন্নয়নের কাজ করতে হবে। যাতে আর কোনও অভিযোগ কেউ তুলতে না পারে।’’
অন্যান্য দফতরের কাজ নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক বলেন, ‘মন্ত্রী বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন সাত দিনের মধ্যে। আমরা রিপোর্ট দ্রুত জমা দেব।’’ বৈঠক শেষে ন্যাজাটের কালীনগরে সন্দেশখালি বিধানসভার বিভিন্ন তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন সুজিত, নারায়ণেরা। যদিও এ দিনের বৈঠকে সন্দেশখালি ১, ২ ব্লক সভাপতি, বেড়মজুর ১ পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি, সন্দেশখালি ২ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি, সরবেড়িয়া আগারহাটি পঞ্চায়েতের প্রধানের শূন্য পদে কাকে বসানো হবে, সে দিকে সকলের নজর ছিল। তবে এ দিন সিদ্ধান্ত হয়নি। সুকুমার বলেন, ‘‘মন্ত্রী জানান, বিভিন্ন পদের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করতে। শেষ সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নেবেন।’’ তৃণমূলের অন্দরের খবর, পদে কে বসবে, তা নিয়ে কোন্দলের জন্যই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।