দমকলের সাহায্যে করোনা আক্রান্ত এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি
তামিলনাড়ু থেকে আসা চার পরিযায়ী শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হলেন হাসনাবাদের বিশপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের ২৫ জন বাসিন্দা গত বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর ত্রিশূর থেকে বাসে করে হাসনাবাদ আসেন। ওই বাসে অন্য জায়গার আরও ২৫ জন তামিলনাড়ু থেকে ফেরা শ্রমিক ছিলেন। বিশপুর পঞ্চায়েতের ২৫ জন বাসিন্দা বৃহস্পতিবার হাসনাবাদ নেমে টাকি হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করা হয়। তারপর থেকে তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাসে রাখা হয়েছিল। শনিবার রাতে করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট মেলে। রবিবার ভোরে চারজনকে বসিরহাট ২ ব্লকের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রবিবার পর্যন্ত ওই চার জনের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। হিঙ্গলগঞ্জের বিএমওএইচ অঙ্কুর কর্মকার বলেন, “করোনা আক্রান্তেরা যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাসে ছিলেন, তাই ওই নিভৃতবাসে থাকা অন্যদের স্বাস্থ্যের দিকে নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁদেরও লালারস সংগ্রহ করা হবে।”
ওই চারজন যে নিভৃতবাস কেন্দ্র ছিলেন, সেখানে এখন শতাধিক শ্রমিক আছেন। তাঁরা সকলেই উদ্বিগ্ন।
শুক্রবার কুলপি গ্রামীণ হাসপাতালে এক স্বাস্থ্যকর্মী ও আরও একজনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ার পরে ওই এলাকায় আরও আটজনের পজ়িটিভ হওয়ার খবর মিলল। শনিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার করঞ্জলির এক পল্লি চিকিৎসক ও চকতারা গ্রামের দুই মহিলার পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। রবিবার কুলপি গ্রামীণ হাসপাতালে আরও পাঁচ স্বাস্থ্যকর্মীর রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। হাসপাতালের হেলথ ইনস্পেক্টর দীপক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সকলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পর পর একাধিক পজ়িটিভ মেলায় কুলপি গ্রামীণ হাসপাতালে সোমবার থেকে সমস্ত পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
হাবড়া শহরে নতুন করে চারজনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। হাবড়া পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক মানস দাস বলেন, "শুক্রবার দু’জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। দু'জনেই করোনা পজ়িটিভ। তাঁদের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।" পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীনগরের বাসিন্দা সাতচল্লিশ বছরের এক ব্যক্তি করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন। তিনি ফল ব্যবসার সূত্রে কলকাতায় যাতায়াত করতেন। অন্যজন বাণীপুরের বাসিন্দা এক মহিলা। তিনি সম্প্রতি মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন। শহরের বাসিন্দা এক বৃদ্ধার লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট শনিবার রাতে পুরসভায় এসেছে। তিনি করোনা পজ়িটিভ বলে জানিয়েছেন মানস। হাবড়া ১ ব্লকের গোয়ালবাটি এলাকার এক মিষ্টির দোকানিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। হাবড়া ১ বিএমওএইচ সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই মিষ্টির দোকানির লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। তিনি করোনা পজ়িটিভ।’’ দিন কয়েক আগে ওই দোকানি ও তাঁর ছেলের জ্বর আসে। হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। হাবড়া ২ ব্লকের বাঁশপুল পঞ্চায়েত এলাকায় এক পরিযায়ী শ্রমিক করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্য রমা দাস। অন্য দিকে, বনগাঁ সীমান্তে কর্মরত এক বিএসএফ জওয়ান করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘ওই জওয়ানের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়েছি। তিনি পজ়িটিভ। তাঁর বাড়ি কর্ণাটকে।’’ অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকার কয়াডাঙা মোড় এলাকার এক যুবক করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার।