আর্জেন্টিনার জার্সি কিনছেন এক সমর্থক, বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র
পাঠক যখন এই প্রতিবেদন পড়ছেন, তখন মেসি-এমবাপে দ্বৈরথ শেষ। বিশ্বকাপ কার হাতে উঠল, জেনে গিয়েছেন সকলে। তবে বিশ্বকাপ উৎসবকে ঘিরে দুই জেলা জুড়ে ফুটবল উন্মাদনায় এ ক’দিনে হাসি ফুটেছে ক্রীড়া সরঞ্জাম ব্যবসায়ীদের।
বনগাঁয় ব্যবসায়ীরা জানালেন, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, পর্তুগালের পতাকা-জার্সি প্রচুর বিক্রি হয়েছে। ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ায় আর্জেন্টিনার পতাকা ও জার্সির বিক্রি সব থেকে বেশি হয়েছে। রবিবার সকালে খেলার জিনিসের দোকানে গিয়ে দেখা গেল ক্রীড়াপ্রেমীদের ভিড়। মেসি লেখা জার্সি ও আর্জেন্টিনার পতাকা কিনতে ব্যস্ত অনেকে। বিক্রেতা রতন চক্রবর্তী জানালেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে নেইমার লেখা জার্সি ও ব্রাজিলের পতাকা ভালই বিক্রি হয়েছে। পরে আর্জেন্টিনার জার্সি ও পতাকার চাহিদা প্রচুর বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ব্যবসা ভাল হয়েছে। আমরা খুশি।’’
বনগাঁর ক্রীড়া সরঞ্জাম ব্যবসায়ী শিবপ্রসাদ বসু বলেন, ‘‘বিশ্বকাপের প্রথম দিকে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালের পতাকা-জার্সি বেশি বিক্রি হয়েছে। ব্রাজিলের পতাকা জার্সি ১২ মাসই বিক্রি হয়। ফলে সমস্যা হয়নি।’’ একই ছবি দেখা গেল ডায়মন্ড হারবারে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বিশ্বকাপের শুরু থেকেই বিভিন্ন ক্রীড়া সরঞ্জামের দোকানে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, জার্মানির জার্সি ঢালাও বিক্রি হয়েছে। খেলা যত এগিয়েছে, আর্জেন্টিনার জার্সি-পতাকার বিক্রি বেড়েছে। রবিবার সকালেও অধিকাংশ দোকানে মেসির নাম লেখা আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে ভিড় জমিয়েছিলেন ক্রীড়াপ্রেমীরা।
একটি খেলার সরঞ্জাম দোকানের মালিক উত্তম দাস বলেন, ‘‘বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার প্রচুর জার্সি বিক্রি হয়েছে। ফ্রান্সের ভক্তও রয়েছেন অনেকে। তবে আর্জেন্টিনার তুলনায় তা অনেক কম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যে দেশগুলি বাদ পড়েছে, সেই দেশের জার্সি পড়ে আছে। পরে আশা করছি ধীরে ধীরে বিক্রি হয়ে যাবে।’’
এদিন সকালে ক্যানিংয়ের খেলার জিনিসের দোকানে ভিড় দেখা গেল ফুটবলপ্রেমীদের। বেশিরভাগই আর্জেন্টিনার সমর্থক। প্রিয় দলের পতাকা-জার্সি ছাড়াও খেলোয়াড়ের পোস্টার দেদার বিক্রি হয়েছে। তবে ফ্রান্স ফাইনালে উঠলেও সেই দলের পতাকা বা জার্সি কেনার তেমন আগ্রহ দেখা গেল যায়নি। কেনাকাটার নিরিখে বলাই যায়, বাঙালির পক্ষপাত ঢলে আছে মেসি-বাহিনীর দিকেই। ক্যানিংয়ের জার্সি-পতাকার ব্যবসায়ী ইসমাইল মোল্লা বলেন, ‘‘ব্রাজিল, পর্তুগাল হেরে যাওয়ায় ওই সব দলের জার্সি-পতাকা আপাতত বিক্রি হচ্ছে না। অনেক টাকার জিনিস কিনেছিলাম। কিন্তু বিক্রি হয়নি। তবে আর্জেন্টিনা ফাইনালে ওঠায় ওদের পতাকা-জার্সি প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে আর্থিক ক্ষতি কিছুটা সামলানো গিয়েছে।’’
বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে দুই জেলার বহু জায়গাতেই এদিন জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখার পরে এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, পিকনিকের ব্যবস্থা হয়েছে। স্থানীয় মাংসের দোকানগুলিতেও ভিড় চোখে পড়েছে।