মুক্ত-হস্তে: শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে গাছের চারা ও পড়াশোনার জিনিসপত্র। নিজস্ব চিত্র
প্রায় আড়াইশো জন অনাথ শিশু আনন্দে বিয়ে বাড়ি গেল। পেটপুরে খাওয়ার পরে পড়াশোনার নানা রকম সামগ্রী উপহারও পেল তারা।
৩১ জানুয়ারি ছিল সুন্দরবনের শিক্ষক অমল নায়েকের বড় ছেলে অর্ঘ্যর বিয়ে। ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার বাসন্তীর শিবগঞ্জের বাড়িতেই বৌভাতের অনুষ্ঠান। এ দিনই প্রায় আড়াইশো জন অনাথ শিশুদের নিমন্ত্রণ করে খাইয়ে, পাল্টা তাদের হাতে উপহার তুলে দিলেন এই শিক্ষক। শিক্ষা সামগ্রী ও গাছের চারা উপহার দিয়ে সমাজকে বাঁচানোর বার্তা দিলেন বছর পঞ্চান্নর মাস্টারমশাই। শ্বশুরমশাইয়ের উদ্যোগে খুশি নববধূও।
সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের শিবগঞ্জ গ্রামে জন্ম অমল নায়েকের। সুন্দরবনের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখতে দেখতেই বড় হয়েছেন। বাসন্তী হাইস্কুলেও দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষকতা করছেন অমল। পাশাপাশি বিগত প্রায় দু’দশক ধরে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজকর্ম করে চলেছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের বাঘে আক্রান্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছেন এই শিক্ষক। একটি সামাজিক সংগঠন তৈরি করে সুন্দরবনের কয়েকশো বাঘে আক্রান্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন অমল।
একদিকে যেমন বাসন্তী এলাকার একাধিক অনাথ আশ্রমের প্রায় আড়াইশো শিশুকে অন্যান্য নিমন্ত্রিতদের মতোই পাত পেড়ে খাওয়ালেন তিনি, তেমনই নববধূর হাত দিয়ে এই শিশু, কিশোরদের হাতে গাছের চারা, শিক্ষা সামগ্রী তুলে দিয়েছেন তিনি। অমল বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করে এই সমস্ত অনাথ আশ্রমের আবাসিক শিশু, কিশোরদের কেউ খাওয়ান না। কিন্তু ওরাও যে এই সমাজের অঙ্গ, ওদেরও যে সমাজের সর্বস্তরে আনন্দ উপভোগ করার অধিকার রয়েছে, কার্যত এই বার্তা দিতেই আশ্রমের আবাসিক শিশু কিশোরদের এ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। নিজে হাতে খাবার পরিবেশন করেছি।’’ নববধূ সুমনা বলেন, “ওঁর কাজে আমি অনুপ্রাণিত হলাম। দিনটি আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’