ভাঙড়ে চোর সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।
ভাঙড়ে চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। ভোরবেলায় চোর ভেবে এক ব্যক্তিকে ধরে বেঁধে রাখা হয়। বাঁধা অবস্থাতেই তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। থানার অদূরেই গোটা ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম আজগর মোল্লা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় থানার অন্তর্গত ফুলবাড়ি এলাকায় বাসিন্দা তিনি। ভাঙড় বাজার এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে চুরির ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এলাকায় রাতপাহারার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। অভিযোগ, পাহারাদারেরা চলে গেলে চুরি হত। যা নিয়ে স্থানীয়েরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। এর পরেই রবিবার ভোরে ওই ব্যক্তিকে ধরা হয়। চোর সন্দেহে তাঁকে প্রথমে বেঁধে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অনেকেই তাঁকে মারধর করেন।
ব্যক্তিকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকতে দেখে প্রথমে সকলেই ভেবেছিলেন, তিনি নেশাগ্রস্ত। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘রাতে পাহারাদারেরা চলে গেলে চুরি হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে একই ঘটনা বার বার ঘটছে। তাই নজর রাখা হয়েছিল। ভোর সাড়ে ৪টের পর ওঁকে ধরা হয়েছে। ধরে বেঁধে রাখা হয়েছিল। সকলে মারধর করেছেন। অনেক ক্ষণ পড়ে ছিলেন। আমরা সকলে ভেবেছি, নেশা করে পড়ে আছেন। কিন্তু তার পর দেখা যায়, উনি মারা গিয়েছেন।’’
উল্লেখ্য, ভাঙড় থানা কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অভিযোগ, মৃতের পরিবার দেহ পুলিশকে নিতে দেয়নি। তাঁদের তরফে অভিযোগও দায়ের করা হয়নি। ডিসি সৈকত ঘোষ জানিয়েছেন, পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটে চলেছে। কোথাও আক্রান্তদের মৃত্যু হচ্ছে। কোথাও আবার গুরুতর জখম হচ্ছেন তাঁরা। চোর সন্দেহে বৌবাজারের হস্টেলে এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে কিছু দিন আগে। অনুরূপ ঘটনা ঘটে সল্টলেকেও। উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গা থেকেও গণপিটুনির খবর এসেছে। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল ভাঙড়ও।