ক্ষ্যাপা পাগল গোঁসাইদের নিয়ে মতুয়াদের মিছিল বনগাঁ শহরে। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে উদ্বাস্তু ও মতুয়া সমাজের মানুষের মন পেতে সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) কার্যকর করার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ফের কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মতুয়া সমাজের মানুষেরাই। বিজেপি এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।রবিবার বনগাঁ শহরে শেষ হল তিন দিনের অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের বনগাঁ মহকুমার সম্মেলন। সেখানেই মমতা দাবি করেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী আবার ক্ষমতায় এলে ওপার বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তু এবং মতুয়া সমাজের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ১৯৭১ সালের পরে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা আবার বে-নাগরিক হয়ে যাবেন। কারণ, শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আমরা নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই। না হলে দিল্লিতে গিয়ে আমরণ অনশন শুরু করব।’’
সম্মেলনের শেষ দিনে মতুয়া ভক্তদের নিয়ে শহরে পদযাত্রা হয়। মমতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের বনগাঁ মহকুমা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, পুরপ্রধান গোপাল শেঠ প্রমুখ। কর্মসূচি থেকে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরেরও সমালোচনা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শান্তনু ঠাকুর ভোটে জিতেছিল। কিন্তু পাঁচ বছরে তিনি নাগরিকত্ব দিতে পারেননি। পারবেনও না।’’ বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল পাল্টা বলেন, ‘‘উনি (মমতা ঠাকুর) প্রথম থেকে নাগরিকত্বের বিরোধিতা করে আসছেন। কারণ, উনি মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করেন। শান্তনু ঠাকুর মতুয়া ও উদ্বাস্তু মানুষদের নাগরিকত্বের দাবিতে লড়াই করছেন। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেছেন, তখন মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেনই। মতুয়ারা তা বিশ্বাস করেন।"
এ দিন শান্তনুকে কুলাঙ্গার বলেও কটাক্ষ করে মমতার দাবি, ‘‘মতুয়া ধর্মকে ধ্বংসকারী শান্তনুর মতো আর কেউ নেই।’’ শান্তনু সম্পর্কে মমতার ভাইপো। সে কথা স্মরণ করে ওই বিজেপি সাংসদ পাল্টা বলেন, ‘‘কুলাঙ্গার বলাটা আমি গ্রহণ করলাম। এটা আমার কাছে আশীর্বাদ। অজ্ঞান মানুষদের চোখ খোলানো যায় না। শুধু মুখ খোলানো যায়। এতদিন কোনও সাড়াশব্দ ছিল না। এখন ভোটের আগে চেঁচামেচি শুরু করেছেন। আমি বলছি, উনি টিকিট পাবেন।’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, সামনেই লোকসভা ভোট। এ বারও প্রার্থী হতে মমতা কর্মসূচির মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। যদিও মমতা বলেন, ‘‘আমি লোকসভায় প্রার্থী হব কি না, তা ঠিক করবেন দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)।’’ তবে, ভোটে দাঁড়ালে জয়ের বিষয়ে তিনি নিশ্চিত বলেও দাবি করেছেন।