Coronavirus Lockdown

পুলিশের ভয়ে শুনশান লকডাউনের বারাসত

গত সপ্তাহে আংশিক ও সময়ভিত্তিক লকডাউন চলার পরে শনিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় বারাসত পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ০২:৩৫
Share:

লকডাউনে প্রায় ফাঁকা বারাসত উড়ালপুল। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

করোনা সংক্রমণ এড়াতে বিধি মানার ইচ্ছা থেকে নয়, কার্যত পুলিশ ও র্যাফের ভয়েই রবিবার লকডাউন মানলেন বারাসত পুর এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন সকাল থেকেই এলাকার দোকানপাট বন্ধ ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, মাস্ক না-পরে রাস্তায় বেরোনো মানুষের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। বৃহস্পতি ও শনিবার রাজ্য জুড়ে চলা লকডাউনেও কড়া হয়েছিল পুলিশ। বিধি না-মানার অভিযোগে দু’দিনে মোট ১৬২ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ছিল পুলিশি পাহারা। ওই দু’দিনের অভিজ্ঞতা থেকেই রবিবারের লকডাউনে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বারাসতবাসী বাইরে বেরোননি বলেই মনে করছে পুলিশ ও প্রশাসন।

Advertisement

গত সপ্তাহে আংশিক ও সময়ভিত্তিক লকডাউন চলার পরে শনিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় বারাসত পুরসভা। শনিবার গোটা রাজ্যেই ছিল সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। ফলে শুধু মাত্র বারাসত পুর এলাকায় লকডাউন শুরু হল কার্যত এ দিন থেকেই। কড়া ভাবে লকডাউন বলবৎ করার জন্য সকাল থেকেই তৎপর ছিল পুলিশ ও পুরসভা।

সকাল ১০টা নাগাদ হেলা বটতলা এলাকায় একটি দোকান খোলা রয়েছে বলে দেখতে পায় পুলিশ। দোকানের কাছে মাস্ক পরে ঘোরাফেরা করছিলেন দু’-এক জন। তাঁদের দ্রুত বাড়ি ফিরে যেতে নির্দেশ দেয় পুলিশ। দোকানটিও বন্ধ করা হয়। বারাসত পুরসভার ২ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝখানে মসজিদ বাড়ি রোডে কয়েক জন যুবক জড়ো হয়েছেন বলে খবর আসে। তার পরে সেখানে যান বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়। ওই যুবকদের সতর্ক করে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দেন তিনি।

Advertisement

কলকাতা থেকে ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে বাংলাদেশ, উত্তরবঙ্গ-সহ বনগাঁ, বসিরহাটে যাতায়াত করতে হয় বারাসতের উপর দিয়েই। ফলে দূরপাল্লার সব যানবাহনকে লকডাউনের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সংখ্যায় কম হলেও দূরপাল্লার কিছু বাস এ দিন চলাচল করেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, কলকাতা বা নদিয়া থেকে কোনও গাড়িতে বারাসত এসে পায়ে হেঁটে লকডাউনের সীমানা ছাড়িয়ে ফের অন্য যানবাহনে উঠে গন্তব্যে যেতে দেখা গিয়েছে কিছু মানুষকে।

মধ্যমগ্রাম পুর এলাকায় এ দিন ছিল আংশিক লকডাউন। বেলা ১২টা নাগাদ দেখা যায়, বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটা করছেন বাসিন্দারা। বেশ কিছু গাড়ি এবং বাসও চলাচল করে এ দিন। মধ্যমগ্রাম উড়ালপুলের এক দিক আটকে যান নিয়ন্ত্রণ করেছে ট্র্যাফিক পুলিশ। মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় দড়ি আটকে পথচারীদের পারাপার করানো হয়। এ দিন পথচারীদের প্রায় সকলের মুখেই ছিল মাস্ক। বেলা ১টায় লকডাউন শুরু হতেই শুনশান হয়ে যায় মধ্যমগ্রাম এলাকাও।

এ দিকে, বারাসতের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। কিছু এলাকায় আক্রান্তদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু মানুষ অসহযোগিতা করছেন বলেও অভিযোগ এসেছে বলে প্রশাসন

সূত্রের খবর। এক করোনা আক্রান্তের বাড়িতে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ দিন সুনীলবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের খবর পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে এমন ঘটনা বাড়তে থাকলে তা নিয়ে মাইকে প্রচার করা হবে। জানিয়ে দেওয়া হবে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement