প্রতীকী ছবি।
এয়ারহর্নের দাপটে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ থেকে বহু গাড়ি ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কলকাতার দিকে চলাচল করে। অভিযোগ, তারস্বরে হর্ন বাজায় এই সব গাড়ি। রাস্তার পাশেই রয়েছে বহু স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল। বহু বাড়ি, দোকান-বাজার আছে। এয়ারহর্নের দাপটে নাজেহাল সকলেই।
সরিষা আশ্রম মোড়ের পাশেই রয়েছে দু’টি স্কুল। সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন ও সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যামন্দির। দু’টি স্কুলেরই শ্রেণিকক্ষ জাতীয় সড়কের পাশে। এয়ারহর্নের শব্দে ক্লাস চলাকালীন সমস্যা তৈরি হয় বলে জানায় পড়ুয়ারা। কখনও কখনও রেষারেষি করতে গিয়ে দু’টি গাড়ির চালক এক সঙ্গে হর্ন বাজায়। স্কুল সূত্রের খবর, কিছুটা সময়ের জন্য পড়া বন্ধ রাখা ছাড়া তখন উপায় থাকে না।
সব থেকে বেশি সমস্যা হয় স্কুলে পরীক্ষার সময়ে। হর্নের আওয়াজে পরীক্ষার্থীদের মনোসংযোগ নষ্ট হয়। সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন সারদা মন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ক্লাসগুলি রাস্তার কাছাকাছি। ফলে এয়ারহর্নের আওয়াজে ক্লাস চলাকালীন ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয়। তা ছাড়া, পরীক্ষার সময়ে ছাত্রছাত্রীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। বিষয়টি মৌখিক ভাবে প্রশাসনকে বলা হয়েছে।’’ এই দু’টি স্কুল ছাড়াও জাতীয় সড়কের পাশে একাধিক স্কুল রয়েছে। এয়ার হর্নের দাপটে সমস্যায় পড়ছে সেই সব স্কুলের পড়ুয়ারাও।
ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ চপলকুমার পন্ডা বলেন, ‘‘এয়ার হর্নের ফলে শিশুরা শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারে। কানের মধ্যে শোঁ শোঁ বা মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রেও ক্ষতিকর এয়ার হর্ন।’’
ডায়মন্ড হারবার টাউন তৃণমূল যুব সভাপতি রাজশ্রী দাস বলেন, ‘‘এয়ারহর্ন বন্ধ করার জন্য বাস মালিক, পরিবহণ দফতর এবং প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছিল। তাতে সমস্ত গাড়ির এয়ার হর্ন খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়।’’ ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা জানান, এয়ারহর্ন নিয়ে বাস মালিকদের সচেতন করা হয়েছিল। অনেকেই এয়ারহর্ন খুলে ফেলেন। তবে বাইরে থেকে বহু গাড়ি আসে। তারাই এয়ারহর্ন বেশি ব্যবহার করছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অশোক ঘোষের কথায়, ‘‘এয়ারহর্ন ব্যবহার অনেক আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও হয় তো অনেকে ব্যবহার করছেন। খুব শীঘ্রই অভিযান চালানো হবে।’’