মনোরম: পাখিদের এই সমাহার দেখে মন ভরে পর্যটকদের। নিজস্ব চিত্র।
শিকারিদের হাত থেকে পাখিদের প্রাণ বাঁচাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন গ্রামের মানুষ।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালীতলা পঞ্চায়েতের ৩ নম্বর সামসেরনগর গ্রাম সুন্দরবন লাগোয়া। শীতের মরসুমে পরিযায়ী পাখিদের ভিড় জমে যায় সামসেরনগরে পাখিরালয়ে। চোরাশিকারিরা সেই পাখি মেরে মাংস বিক্রি করত বাজারে। ক্রমশ সংখ্যায় কমতে থাকে পাখির দল। গ্রামের কয়েকজন পালা করে পাহারা শুরু করেন। গ্রামের মানুষ জানালেন, চোরাশিকারিদের দাপট এখন অনেকটাই কমেছে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সব সময়েই পাখিদের দেখা মিলছে ঝিঙেখালি বন দফতরের হাতে থাকা ওই জঙ্গলে। নজর রাখছেন বনকর্মীরাও।
৩ নম্বর সামসেরনগর গ্রামটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। সে দেশেও পাখির ঝাঁকের দেখা মেলে ইদানীং। নানা প্রজাতির পাখির ডাকে মনোরম হয়ে ওঠে পরিবেশ। পর্যটকেরা আসেন পাখিরালয়ে। পাখির ছবি তুলতেও আসেন অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দা রতন মুন্ডা, ভবেন মণ্ডল, কমল মাঝিরা জানালেন, পাখিরালয়ের জঙ্গলে ঢুকে চোরাশিকারিরা যাতে পাখি মারতে না পারে, সে জন্য বনকর্মীদের সাহায্য নিয়ে তাঁরা পাহারা দেন নিয়মিত। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান দীপ্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘পাখিদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য চড়ুইভাতি করতে আসা পর্যটকদের জোরে মাইক বাজানো বন্ধ এখানে।’’
কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সেন, কাকলি বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দন বসুদের সঙ্গে দেখা হল এলাকায়। হাতে তাঁদের ক্যামেরা। এসেছেন পাখির ছবি তুলতে। সঞ্জয় বলেন, ‘‘বিকেলের দিকে পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে জঙ্গলে ফেরে। সকালে আবার খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে যায়। সেই দৃশ্যের টানেই আসা।’’
হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সামসেরনগরে পাখিরালয় জঙ্গলে এ বার পাখিদের আনাগোনা অনেকটাই বেশি হয়েছে। অন্যান্যবারের থেকে বাতাসে দূষণের মাত্রা কম। পর্যটকদের সুবিধার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে জঙ্গলের পাশ বরাবর কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। পাখিরালয় দেখতে আসা পর্যটকদের থাকার জন্য একটা গেস্ট হাউস আছে। আরও একটা গেস্ট হাউস করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’