অত্যাচারে বাড়ি ছাড়েন কৃষ্ণেন্দুর স্ত্রীও। নিজস্ব চিত্র।
মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের পাশে দাঁড়ালেন কুলপি ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় বিধায়ক। অর্থাভাবে চিকিৎসা করানোর সামর্থ না থাকায় বাধ্য হয়ে ছেলেকে টানা এক বছর ধরে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন তাঁর বাবা-মা। মঙ্গলবার ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে শিকল মুক্ত করলেন বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার । তাঁকে প্রশাসনের তরফ থেকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে৷
কুলপির কেওড়াতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামতলা গ্রামের বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সি কৃষ্ণেন্দু দোলুই মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি মাঝে মধ্যেই নিজের বাবা-মাকে মারধর করতেন। ঠিক হয়ে যাবে ভেবে তাঁর বিয়ে দেন বাবা-মা। তবে অত্যাচারে বাড়ি ছাড়েন তাঁর স্ত্রীও। অবশেষে বাধ্য হয়ে তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখারই সিদ্ধান্ত নেন তাঁর বাবা-মা। এ ভাবেই টানা এক বছর ধরে শিকলবন্দী হয়ে দিন কাটছিল কৃষ্ণেন্দুর। এই খবর পেয়ে সেই গ্রামে যান যোগরঞ্জন, কুলপির বিডিও দেবর্ষি মুখোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিরা। কৃষ্ণেন্দুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁর শিকল খুলে দেওয়া হয়।
কুলপির বিডিও দেবর্ষি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘খবর পেয়েছিলাম কৃষ্ণেন্দুকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরিবারের লোকজনের চিকিৎসা করার মত সামর্থ নেই। দ্রুত বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে আমরা ওর বাড়িতে যাই। ওর অত্যাচারে পরিবারের সদস্যরা অতিষ্ঠ । চিকিৎসা করাতে পারেনি তাঁরা। আপাতত কুলপির হাসপাতালে ওকে রাখা হয়েছে। মনসিক রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি ছেলেটিকে হোমে রাখার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।’’
কৃষ্ণেন্দুর মা, রুমা দলুই বলেন, ‘‘ওর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। প্রথমে কিছুদিন চিকিৎসা করাই। চিকিৎসা করাতে অনেক খরচ। অনেক টাকা লাগবে। আমাদের সেই সামর্থ নেই। এদিকে চিকিৎসা না হওয়ায় মাথার সমস্যা আরও বাড়ছে। যখন তখন মারতে আসে। ছেলেকে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়ে শিকল দিয়ে আটকে রেখেছিলাম।’’
কৃষ্ণেন্দুর বাবা-মায়ের আর্জি, ছেলে যেন সুস্থ হয়ে আবার সাধারণ মানুষের মত বাঁচতে পারে।