কামারহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
কেউ উত্তরপ্রদেশ, কেউ আবার বিহারের বাসিন্দা। কেউ আবার অন্য জেলার। কিন্তু শাসকদলের স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদতে সরকারি জমিতেই তাঁরা গড়ে তুলেছেন একের পর এক ঝুপড়ি, গাড়ি সারানোর গ্যারাজ থেকে প্লাস্টিকের গুদাম। অভিযোগ, বেআইনি এই প্রতিটি দখলের নেপথ্যে রয়েছে কয়েক হাজার টাকার লেনদেন!
সরকারি জমিতে কোনও ভাবেই দখলদারি বরদাস্ত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরে এ বার নড়ে বসেছে কামারহাটি পুরসভা। শনিবার ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের উড়ানপাড়া, বটতলা অঞ্চল পরিদর্শনে যান পুর আধিকারিকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সাত দিন ধরে সরকারি জমি খালি করার জন্য মাইকিং করা হয়। শনিবার উচ্ছেদের জন্য গেলে, দখলদারেরা সরে যাওয়ার জন্য রবিবার পর্যন্ত সময় চান। পুরকর্তৃপক্ষ তাতে সম্মতি দিয়েছেন। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘রবিবারের পরে আর কোনও কথা শোনা হবে না। ওঁরা কোথায় যাবেন, তা দেখা আমাদের কাজ নয়।’’
কামারহাটির ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকাটি মূলত আগরপাড়া স্টেশন রোড হিসাবে পরিচিত। একপাশে রয়েছে পুরসভার আবর্জনা জমা করার জায়গা। বাকিটা পূর্ত দফতরের জমি। অভিযোগ, প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তার দু’ধারে গজিয়ে উঠেছে পর পর বেআইনি ঘর, দোকান, গ্যারাজ। প্রায় ৫০টি পরিবার সেখানে থাকে। দাহ্য বস্তু জড়ো করে রাস্তা দখল করে ব্যবসা চলছে দীর্ঘ দিন ধরেই। কয়েক বছর আগে পুড়ে গিয়েছিল দু’টি বাড়ি, দোকান। আবার সন্ধ্যা নামলে ওই এলাকা নেশার আখড়ায় পরিণত হয় বলে অভিযোগ।
গত বৃহস্পতিবারের মধ্যে উঠে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও এলাকা দখল মুক্ত না হওয়ায় এ দিন দুই চেয়ারম্যান পারিষদ সৌমিত্র পুততুণ্ড, শ্যামল চক্রবর্তী ও পুরপ্রতিনিধি শ্রীতমা ভট্টাচার্য-সহ পুর আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে যান।
প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘ দিন ধরে দখলদারি চললেও পুরসভা নিশ্চুপ কেন? কী ভাবে ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দারা সরকারি জমি দখল করলেন? কামারহাটি পুরসভার প্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো দখলদারি সরানো হচ্ছে। তবে কারা ওই জায়গা পেতে সহযোগিতা করেছিলেন, দেখা হবে।’’