Child Marriage

Child Marriage: ‘এমন একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হবে, আশা করিনি’

শুক্রবার পাখিরালয় এলাকায় ষোলো বছরের এক নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে বন্ধ করতে গিয়েছিলেন গোসাবার যুগ্ম বিডিও অভিষেক রায়-সহ কয়েকজন সরকারি কর্মী।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

গোসাবা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

বদলির আগে, কাজের শেষদিনের স্মৃতি বড় মধুর হল না যুগ্ম বিডিওর!

Advertisement

শুক্রবার পাখিরালয় এলাকায় ষোলো বছরের এক নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে বন্ধ করতে গিয়েছিলেন গোসাবার যুগ্ম বিডিও অভিষেক রায়-সহ কয়েকজন সরকারি কর্মী। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূলের রাঙাবেলিয়া অঞ্চল সভাপতি তন্ময় মণ্ডল ওরফে নান্টা তাঁদের বাধা দেন। সরকারি আধিকারিকদেরকে গালিগালাজ করেন। এরপর থেকে এলাকায় এলে যেন তাঁকে জানিয়ে আসেন, সেই হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ। ‘বাড়াবাড়ি করলে’ ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ হুমকিও দেন ওই তৃণমূল নেতা। নাবালিকার বিয়ে রোখার কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে আসতে বাধ্য হন প্রশাসনের কর্মীরা।

শনিবার বিষয়টি বিডিও-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানান ব্লক অফিসের কর্মীরা। কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক চাইল্ড লাইনের কর্মী বলেন, ‘‘সরকারি আধিকারিকেরা যদি এই সমস্যায় পড়েন, তা হলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমাদেরও অনেক সময়ে সমস্যায় পড়তে হয়। স্থানীয় নেতাদের রক্তচক্ষু দেখতে হয়। এ রকম চলতে থাকলে কী ভাবে কাজ করব!’’

Advertisement

এ দিকে, ঘটনার পরে চারদিন কেটে গেলেও এখনও প্রশাসনের তরফে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, ‘‘কী হয়েছে, সঠিক জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার সঙ্গে এদিনও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। মেসেজেরও উত্তর দেননি তিনি। গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলকেও বিডিও ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাসটুকুই শুধু মিলেছে বিধায়কের কাছ থেকে।

রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন দলদাসে পরিণত হয়েছে। শাসকদলের লোক এ কাজ করেছে, তাই প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটেছে। বিরোধীরা এমন কিছু করলে এতক্ষণে জেল হয়ে যেত।”

গোসাবার যুগ্ম বিডিও অভিষেক রায়ের শুক্রবারই ছিল এই অফিসে কাজের শেষ দিন। বদলির নোটিস এসে গিয়েছে তাঁর। পাখিরালয়ে যে কাজে তিনি গিয়েছিলেন, সঙ্গে ছিলেন রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক শুভেন্দু মণ্ডলও।

অভিষেক মঙ্গলবার টেলিফোনে বলেন, ‘‘এ রকম একটা স্মৃতি নিয়ে ফিরতে হবে, আশা করিনি। প্রায় আড়াই বছর গোসাবায় চাকরি করেছি। অনেক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছি সরকারি নিয়ম মেনে। তবে কোথাও এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হইনি।’’ তিনি জানান, বিডিওকে বিস্তারিত জানিয়েছেন। আশা করছেন, সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement