ভিড়: ঝড়খালি পর্যটনকেন্দ্রে হাজির হলেন পর্যটকেরা। সোমবার দুপুরে। নিজস্ব চিত্র
ভেঙে পড়েছে শতাধিক গাছ। পাশাপাশি সড়ক পথে এই পর্যটনকেন্দ্রে আসার রাস্তায়ও প্রচুর গাছ ভেঙে পড়ে রয়েছে। ফলে রাস্তা একপ্রকার বন্ধই। বুলবুলের দমকা হাওয়ায় তছনছ হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের ঝড়খালি পর্যটনকেন্দ্র। আর সে জন্যই এখন অস্থায়ী ভাবে বন্ধ রয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি।
তবে জোর কদমে চলছে গাছ সরিয়ে এই কেন্দ্রটি পর্যটকদের উপযোগী করে তোলার কাজ। কিন্তু তারই মধ্যেই বহু পর্যটক হাজির হয়েছেন সুন্দরবনের ঝড়খালিতে। সোমবার সকাল থেকেই সুন্দরবনের ঝড়খালি পর্যটনকেন্দ্রে দেখা মিলল বহু পর্যটকদের। তবে পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে ঢুকতে না পেরে আশাহত হয়েছেন তাঁরা। গত শুক্রবার থেকেই সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন। বেড়াতে এসে যাতে কেউ ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে বিপদে না পড়েন সেই কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। আগামী ১৭ই নভেম্বর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সোমবার সকাল থেকেই পর্যটকরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সুন্দরবনে। এ দিন বেশ কিছু পর্যটকদের দেখা মেলে ঝড়খালি পর্যটনকেন্দ্রে। বিহার, ছত্তিসগড় এমনকী কলকাতা থেকেও পর্যটকরা এ দিন আসেন ঝড়খালিতে। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় নিরাশ হয়ে ফেরেন তাঁরা।
ছত্তিসগড় থেকে আসা রমেশ দেব বলেন, “অনেক আগে থেকেই বুকিং করা ছিল সুন্দরবনে আসার। ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে শুনেছিলাম, ভেবেছিলাম ঝড় থেমে গেলে ঘোরাঘুরি করা যাবে। কিন্তু এখনও সব বন্ধ থাকায় আমাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।’’ কলকাতার মানিকতলা থেকে এসেছিলেন সোহিনী ঘোষ। তিনি বলেন, “এই পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে প্রচুর গাছপালা পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। বনকর্মীরা সেগুলিকে পরিষ্কারের কাজ করছেন। তাই বন্ধ রাখা হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রটি। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ভিতরে ঢুকতে পারলাম না। তবে পরে আবার আসব।’’
বুলবুলের তাণ্ডবে গোসাবা, ঝড়খালি এলাকায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কাঁচাবাড়ি ভেঙে গিয়েছে অনেক। হাজার হাজার বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত চলা এই ঝড়ের প্রভাবে এখনও ঝড়খালি, গোসাবা-সহ সুন্দরবনের আশপাশের এলাকার রাস্তা থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরানো যায়নি। ঝড়খালিরও একই অবস্থা। আর সেই কারণেই আপাতত অস্থায়ী ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এই পর্যটনকেন্দ্রটি।
এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের ডিএফও সন্তোশা জে আর বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ে পর্যটনকেন্দ্রের অনেক ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর গাছ ভেঙেছে। পর্যটনকেন্দ্রটি খুলতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।’’ পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের পাশাপাশি আপাতত এই কেন্দ্র থেকে নদীতে ভ্রমণের জন্য সরকারি ছাড়পত্র দেওয়াও বন্ধ রাখা হয়েছে।