জামালউদ্দিন সর্দার। —ফাইল চিত্র।
এক মহিলাকে শিকলে বেঁধে মারধরের অভিযোগে ধৃত সোনারপুরের জামাল সর্দারকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিলেন বিচারক। শুক্রবার সোনারপুর ও চন্দনেশ্বরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাঁকে ধরা হয়। শনিবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে তোলা হয়। পুলিশ ১৪ দিনের হেফাজত চাইলেও মঞ্জুর হয়েছে ১০ দিনের হেফাজত।
আদালতে ঢোকার মুখে এ দিন তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন জামাল। তাঁর দাবি, “এলাকায় সরকারি জমিতে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। সেই ঘটনার জেরে সমীর নস্কর-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলাম। তাঁরাই চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছেন। কাউকে মারধর করিনি। জমি দখল করিনি। বরং জমি দখলের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলাম।” বাড়িতে থাকা ঘোড়াটি তাঁর নয় বলেও দাবি করেন জামাল।
সমীর ওই এলাকার বিজেপি নেতা। আক্রান্ত মহিলাকে নিয়ে তিনিই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। জামালের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওঁর বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ আছে। নিজের ভাই-দাদারাও ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। গ্রামের বহু মানুষ করেছেন। আমি কোনও চক্রান্ত করিনি।” জামালের আইনজীবীরাও এ দিন রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন। তবে কোন রাজনৈতিক দল চক্রান্ত করেছে, তা স্পষ্ট করেননি তাঁরা। এর আগে জামালের তৃণমূল-যোগ সামনে এলেও তা মানতে চাননি এলাকার তৃণমূল বিধায়ক।
মামলার সরকারি আইনজীবী সামিউল হক জানান, জামালের বিরুদ্ধে মারধর, খুনের চেষ্টা, যৌন হেনস্থা-সহ একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। ধারাগুলি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জামালের আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, খুনের চেষ্টার মামলা হয়েছে, কিন্তু আক্রান্তের মেডিক্যাল রিপোর্টে তেমন আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তা ছাড়া, বাড়ির লোকের সামনে মারধর করার অভিযোগ করেন আক্রান্ত। খুনের চেষ্টা করলে সকলের সামনে কেন করবেন, সেই প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। পুলিশ অভিযুক্তের বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করেছে। তার পরেও তাঁকে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ কী করতে চায়, প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা।
পুলিশ জামালের হেফাজতের আবেদন করলেও আবেদনপত্রে ভুল করে ‘জুডিশিয়াল কাস্টডি’ লেখা হয় বলে দাবি তাদের। এ বিষয়ে বিচারক তদন্তকারী অফিসারকে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।