ভাঙড়ের ওই অঞ্চলে দীর্ঘ দিন পর সভা করল তৃণমূল। একই মঞ্চে দেখা গেল আরাবুল ইসলাম, শওকত মোল্লাকে। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভাঙড়ে শুরু দলদবলের রাজনীতি। তৃণমূল বিধায়ক তথা ভাঙড়ের দলীয় পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা এবং তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের উপস্থিতিতে জমি কমিটি এবং আইএসএফ কর্মীরা যোগ দিলেন তৃণমূলে। বস্তুত, দীর্ঘ দিন পরে শওকতকে সামনে রেখে ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড এলাকায় একটি সভা করল তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঙড়ে সংগঠন মজবুত করতে এই সভা। তৃণমূল নেতারা বলছেন, এই সভা এবং যোগদান অনুষ্ঠানের ফলে ভাঙড়ে তাঁরা আরও শক্তিশালী হলেন। যদিও ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকির কটাক্ষ, এটা তৃণমূলের নাটক ছাড়া কিছু নয়।
শনিবারের ওই সভায় শওকত ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের ভাঙড়ের আহ্বায়ক আরাবুল ইসলাম, হাকিমুল ইসলাম, খয়রুল ইসলাম, ওদুত মোল্লা প্রমুখ। এত দিন জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশ রক্ষা কমিটির দাপটে শাসকদল পাওয়ার গ্রিড এলাকায় তাদের কোনও কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, পোলেরহাট ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করার পরেও জমি কমিটির বাধায় পঞ্চায়েত অফিসেই ঢুকতে পারেননি প্রধান, উপপ্রধান, সদস্যরা। বিরোধীদের কটাক্ষ, এখন নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে এই কর্মসূচি করছে তৃণমূল।
তবে সভা এবং যোগদান নিয়ে শওকতের মন্তব্য, ‘‘আইএসএফ বা জমি কমিটির সঙ্গে থাকলে কোনও উন্নয়ন হবে না। এলাকায় কোনও শান্তি ফিরবে না। সে কারণেই সাধারণ মানুষ আমাদের দিকে ফিরছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সারা ভাঙড় জুড়ে এই যোগদান কর্মসূচি চলবে।’’ তৃণমূল নেতা আরাবুল বলেন, ‘‘এলাকায় পাওয়ার গ্রিড, হাসপাতাল-সহ জায়গাগুলি থেকে কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছে। এলাকায় সাধারণ মানুষ এ সব বুঝেছেন। তাঁরা সকলেই তৃণমূলে চলে আসবেন।’’
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেন, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগে মিন্টু বিশ্বাস, আবু তালেব বিশ্বাসদের আমরা এক বছর আগে দল থেকে বার করে দিয়েছিলাম। এর আগেও ওঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। মানুষকে ভুল বোঝাতে আবারও তাঁদের আবার তৃণমূলে যোগদান করানো হচ্ছে।’’ আইএসএফ নেতৃত্বেরও দাবি, তাঁদের উপর কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি তৃণমূল। তবে কয়েক জন কর্মীকে দীর্ঘ দিন ধরে ভয় দেখানো হচ্ছে। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ বলেন, ‘‘ভাঙড়ে তৃণমূল শওকত মোল্লাকে দায়িত্ব দিয়েছে। নেতৃত্বের কাছ থেকে বাহবা পাওয়ার জন্য এই সব নাটক করছেন। কয়েক জন যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’