তাহসানের বিয়ে নিয়ে কী বললেন তসলিমা? ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ে করেছেন তাহসান রহমান খান। রূপটানশিল্পী রোজ়াকে বিয়ে করেছে বাংলাদেশের অভিনেতা-গায়ক। শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। অন্য দিকে একের পর এক কটাক্ষ ধেয়ে আসছে তাহসানের প্রাক্তন স্ত্রী রফিয়াত রশিদ মিথিলার দিকে। ২০১৭ সালে যৌথ ভাবে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেছেন তাহসান ও মিথিলা। তার দু’বছর পরে ২০১৯-এ সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন অভিনেত্রী তথা সমাজকর্মী। ধেয়ে এসেছিল কটাক্ষ। তাহসানের দ্বিতীয় বিয়ে হতেই ফের তাঁকে নিয়ে তির্যক মন্তব্য সমাজমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন।
সমাজমাধ্যমের পোস্টে তসলিমা লেখেন, “ফেসবুক ছেয়ে গিয়েছে ‘তাহসান জিতেছে তাহসান জিতেছে’ রবে। কেন তাহসান জিতেছে, বুঝে পেলাম না। সে একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে বা করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে জেতাজেতির কী হল! হেটারোসেক্সুয়ালদের বিপরীত লিঙ্গে আকর্ষণ থাকে, তারা জীবনের কোনও এক সময় পছন্দসই কাউকে পেলে তার সঙ্গে প্রেম করে, একত্রবাস করে বা তাকে বিয়ে করে। এ তো স্বাভাবিক। জিতল কেন তাহলে তাহসান?” এর একটি কারণ নিজেই দর্শিয়েছেন লেখিকা। বিবাহবিচ্ছিন্ন হয়েও অল্পবয়সি নারীকে স্ত্রী হিসাবে পাওয়া যেন শিরোপা পাওয়ার সমান। নেটাগরিক নাকি এমনই মনে করছেন। মতামত তসলিমার।
তসলিমার বক্তব্য, এই ঘটনায় নারীবিদ্বেষী সমাজই প্রতিফলিত হচ্ছে। তিনি লিখেছেন, “তাহসান জিতেছে, এই নিয়ে সবাই উল্লাস করছে। নারীবিদ্বেষী সমাজে সব পুরুষই জেতে। সর্বক্ষণ জেতে। তাদের হার নেই। হারতে হয় শুধু নারীকেই। কিন্তু আমি কি মনে করি মিথিলা বা রোজা হেরেছে? না। তারা একটুও হারেনি। তারা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রথা ভেঙ্গে নিজের যোগ্যতায় স্বর্নিভরতা এবং স্বাধীনতা অর্জন করেছে। নারীবিদ্বেষী সমাজে নারীর জিতে যাওয়ার প্রথম শর্তই এটি। তারা ভ্রুক্ষেপ করছে না কুৎসা বা নিন্দেয়, এ জিতে যাওয়ার দ্বিতীয় শর্ত।”
এখানেই শেষ নয়। তসলিমা আরও লেখেন, “ভাল না লাগলে তারা তাদের সঙ্গীকে, সে প্রেমিক হোক, সে স্বামী হোক, ত্যাগ করতে পারছে। তারা বাধ্য নয় তাদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় বাস করতে। জিতে যাওয়ার এটি তৃতীয় শর্ত। স্বামীর আচার ব্যবহার যদি পছন্দ না হয় রোজ়ার, তার স্বনির্ভরতাই তাকে সাহস জোগাবে স্বামীকে ত্যাগ করার, মাথা উঁচু করে একা বাঁচার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের জেতা কোনও চ্যালেঞ্জ নয়। নারীর জন্যই এ চ্যালেঞ্জ।”