গোপাল শেঠ।
বনগাঁর পুরপ্রধান হিসেবে দিন কয়েক আগে শপথ নিয়েছেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ। যানজট, নিকাশি, ইছামতী নদী সংস্কার, শব্দদূষণের মতো বিভিন্ন সমস্যা এখনও থেকে গিয়েছে। সমস্যা মেটাতে কী ভাবছেন পুরপ্রধান। আনন্দবাজার পত্রিকার মুখোমুখি বনগাঁ পুরপ্রধান গোপাল শেঠ। শুনলেন, সীমান্ত মৈত্র
আনন্দবাজার: বনগাঁ শহরের যানজট সমস্যা সমাধানে আপনার পরিকল্পনা কী?
গোপাল: বনগাঁ শহরে যানজট মূলত যশোর রোডে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে বাটারমোড়, রামনগর রোডের মোড় এবং ১ নম্বর রেলগেট এলাকায়। সংকীর্ণ সড়কে ট্রাক চলাচল এবং অটো টোটো-সহ অন্য যানবাহন রাস্তায় দাঁড় করানোর ফলে যানজট হয়। আমরা ট্রাক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করব। পরিবহণ দফতর, পুলিশ এবং পুরসভা যৌথ ভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে যশোর রোড যানজট মুক্ত রাখা হবেই।
আনন্দবাজার: শহরে উড়ালপুল হবে কি?
গোপাল: যশোর রোডে উড়ালপুল বা রেলসেতু তৈরির বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। উড়ালপুল করতে গাছ কাটার প্রয়োজন নেই। যাতায়াত মসৃণ করতে আমরা আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে আছি। আদালত সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশ দিক।
আনন্দবাজার: বর্ষায় জল জমা থেকে মুক্তি মিলবে কবে?
গোপাল: শহরে ৮-৯টি ওয়ার্ডে বর্ষায় জল জমে। আমরা ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নিয়েছি। পাম্পের মাধ্যমে নিচু এলাকায় জমে থাকা জল বের করে ইছামতী নদীতে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার: ইছামতী নদীর সংস্কারে কী পদক্ষেপ করবেন?
গোপাল: ইছামতী সংস্কারের বিষয়টি কেন্দ্র সরকারের অধীন। সেই কাজ স্তব্ধ হয়ে আছে। ইছামতীর উৎসমুখে মাজদিয়া-পাবাখালিতে ১৩ কিলোমিটার নদীপথ সংস্কার করে যদি নদী গতিময় করা যায়, তা হলে নদীকে আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হবে। ইছামতীর সঙ্গে গঙ্গাকে যুক্ত করে দিতে হবে।
আনন্দবাজার: শহর জুড়ে চোঙার দৌরাত্ম্য। কী ভাবছেন?
গোপাল: শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক মিটিং-মিছিলে চোঙার ব্যবহার নির্দিষ্ট করা হবে। আদালতের নির্দেশ মেনে শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
আনন্দবাজার: শহর জুড়ে এয়ারহর্নের দাপট কমবে কি?
গোপাল: বাস-ট্রাক থেকে তীব্র এয়ার হর্ন বাজানো হয়। দুর্ঘটনা বাড়ছে। আমরা সব নিয়ন্ত্রণ করব।
আনন্দবাজার: প্লাস্টিক দূষণ রুখতে কি পরিকল্পনা?
গোপাল: বাজারে-দোকানে আমরা কাপড়ের ব্যাগ বিলি করব। তাতে কাজ না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
আনন্দবাজার: শহরে খেলাধূলার উন্নতি নিয়ে পরিকল্পনা?
গোপাল: ফুটবল-ক্রিকেট লিগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনে পুরসভার পক্ষ থেকে তা চালু করব।
আনন্দবাজার: বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা উন্নতিতে কী ভাবনা?
গোপাল: এইচডিইউ’তে শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। আয়া, নিরাপত্তা কর্মীরা যাতে ডিউটি ছাড়া ওয়ার্ডে না থাকেন, তা দেখা হবে। সার্বিক চিকিৎসা পরিষেবা আর উন্নত করা হবে।
আনন্দবাজার: লিটল ম্যাগাজিনের শহর বনগাঁ। এ ক্ষেত্রে কী ভাবনা?
গোপাল: বনগাঁ শহরে যে সব লিটল ম্যাগাজিন আছে, তাঁদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে খরচ দিয়ে তা যাতে নিয়মিত ছাপা হয়, সে ব্যবস্থা করব।
আনন্দবাজার: পুরসভার পরিচালিত ট্রাক পার্কিং লট পরিবহণ দফতর হাতে নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। এর ফলে পুরসভার আয় কমেছে। উন্নয়নে কী বাধা হবে?
গোপাল: শহরের উন্নয়নে এটা কোনও বাধা হবে না। কারণ উন্নয়নের জন্য প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দিলেই তিনি অর্থ মঞ্জুর করে দেবেন।